শেখ হাসিনা কর্তৃক অবাঞ্ছিত ঘোষিত, তার ১৮ বছরের বিশেষ সহকারী মতিউর রহমান রেন্টুর নিষিদ্ধ ঘোষিত আলোড়ন সৃষ্টিকারী বই “আমার ফাঁসি চাই”।
বইটি পড়ে মনে হতে পারে যে, বইটি বোধহয় বর্তমান সময়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর সুযোগ পেয়ে তার বদনাম করার জন্য লেখা হয়েছে। কিন্তু আপনি এটা জেনে অবাক হয়ে যাবেন যে বইটি আজ থেকে ২৭ বছর আগে ১৯৯৭ সালে হাসিনা ক্ষমতায় থাকতেই প্রকাশিত হয়!
লেখক আজ থেকে ২৭ বছর আগেই হাসিনার লোক দেখানো অভিনয়, মানুষ হত্যার খেলা, কুরাজনীতি, ইসলাম বিদ্বেষ ও অনৈতিক জীবন যাপনের বিষয়গুলো উল্লেখ করে গেছেন যা আজ ২৭ বছর পরে এসেও ৯৯% মিলে যায়!
এমনকি আরো অবাক করা বিষয় হলো ২৭ বছর আগেই লেখক ওবায়দুল কাদেরকে অযোগ্য, চাটুকার হিসিবে উল্লেখ করে গেছেন। ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে লেখক যে মন্তব্যগুলো করেছেন সেগুলোও ৯৯% বর্তমানের সাথে মিলে যায়। এই বইটির উপর বিশ্বাস করে বাংলাদেশের জনগন যদি ২৭ বছর আগেই শেখ হাসিনার কাছ থেকে সাবধান হয়ে যেত তবে আজ দেশের এই পরিনতি হতোনা। বইটিতে তৎকালীন সময়ে বিএনপি, জামাত এবং এরশাদের বিভিন্ন বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে।
বইটির লেখক মতিয়ুর রহমান রেন্টু ১৯৮১ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৬ বছর শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারি ছিলেন।
এই রেন্টু হলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি শেখ মজিবুর রহমানের কাছাকাছি চলাফেরা করেছেন, ফলে শেখ মজিবুর রহমানের বহু কার্যাবলি সামানসামনি দেখার সুযোগ পেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন এবং শেখ মজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের পর হত্যার প্রতিবাদে অস্ত্র হাতে বাংলাদেশের তৎকালীন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ করেছেন, যুদ্ধে ধরা পরে দীর্ঘদিন জেলও খেটেছেন এবং পরবর্তিতে শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারি হিসেবে তিনি এবং তার স্ত্রী উভয়েই কাজ করেছেন এবং জিয়াউর রহমান হত্যাকান্ডের সাথেও যুক্ত ছিলেন বলে নিজেই স্বীকার করেছেন! ফলে শেখ পরিবার এবং বিশেষ করে শেখ হাসিনার নাড়ি-নক্ষত্র বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন।
বইটি লেখকের আত্বজীবনি মূলক একটি বই। লেখক নিজেও একসময় আ.লীগ ও হাসিনার প্রতি আবেগ ও অন্ধবিশ্বাসের ফলে বহু খারাপ কাজ করেছেন। পরে যখন দিনের পর দিন হাসিনার এসব অপকর্ম তার চোখের সামনে ঘটতে থাকে তখম তিনি নিজের ভুল বুঝতে পরে এসব থেকে দুরে সরে আসেন।
মতিউর রহমান রেন্টুর আলোড়ন সৃষ্টিকারী বই “আমার ফাঁসি চাই” একটি বাস্তব অভিজ্ঞতাভিত্তিক আত্মজীবনী, যেখানে লেখক তাঁর জীবনের অন্ধকারাচ্ছন্ন অধ্যায়গুলো তুলে ধরেছেন। এ বইয়ে তিনি নিজের জীবনের কঠিন মুহূর্তগুলো, ভেতরের দহন, এবং তার পরিণতি নিয়ে অকপটে লিখেছেন, যা পাঠকের মনে গভীর প্রভাব ফেলবে।
মতিউর রহমান রেন্টুর বই “আমার ফাঁসি চাই” বইয়ে শেখ হাসিনার প্রতি তার বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতামত তুলে ধরা হয়েছে। রেন্টু বইটিতে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সংগ্রাম, এবং ব্যক্তিত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি শেখ হাসিনার জীবন ও কর্মের সঙ্গে তার নিজের অভিজ্ঞতার সংযোগ ঘটিয়ে একটি গভীর ও সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ করেছেন। বইটিতে শেখ হাসিনার সাহসিকতা, দৃঢ়তা, এবং দেশের জন্য তার অবদানকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন, যা পাঠকদের তার নেতৃত্বের প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে।