চীনের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের অভিযোগ করে থাকে পাশ্চাত্য ও মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশ। জাতিসংঘের হিসাব মতে চীনের কারাগারগুলোতে উইঘুর ও অন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে আটক রাখা হয়েছে।
চীনের সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীন সরকার ব্যাপক ধরপাকড় ও নির্যাতন চালাচ্ছে।
গত কয়েক বছর সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে ১০ লাখেরও বেশি মুসলিমকে গ্রেফতার করেছে চীন। একইসঙ্গে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ২২৯টি নিষিদ্ধ ধর্মীয় বস্তু জব্দ করেছে।
যদিও চীন বলছে সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য এসব কারাগার ‘বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ হিসেবে পরিচালিত হয়ে থাকে। শ্বেতপত্রে চীনা কর্তৃপক্ষ বলেছে, শুধু অল্প সংখ্যক মানুষ কঠোর শাস্তি ভোগ করে যারা কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য বা যারা চরমপন্থী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ শিনজিয়াং-এ বাস করে এক কোটিরও বেশি উইঘুর মুসলিম।
এই শ্বেতপত্র প্রকাশের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস। সংগঠনটির একজন মুখপাত্র সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘চীন ইচ্ছাকৃতভাবে সত্য বিকৃত করছে। সন্ত্রাস দমন হচ্ছে উইঘুরদের নির্যাতনের একটি অযুহাত মাত্র। তথাকথিত চরমপন্থা দমনের নামে সরকারের মূল উদ্দেশ্য হলো এই জনগোষ্ঠীর বিশ্বাসকে মুছে ফেলা এবং তাদেরকে ধীরে ধীরে নির্মূল করা।’
শ্বেতপত্রে আরও বলা হয়, ‘২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে জিনজিয়াংয়ে তারা কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। পূর্ব তুর্কিস্তানের যোদ্ধারা জিনজিয়াং এলাকায় তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। তারা জিহাদের মাধ্যমে শহীদ হওয়া ও স্বর্গে যাওয়ার নামে এই চিন্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে।’
শ্বেতপত্রে বলা হয়, জিনজিয়াং চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। উইঘুর নৃ-গোষ্ঠী দীর্ঘ অভিভাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে এসেছে এবং বসবাস করে আসছে। তারা তুর্কি বংশধর না।
উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে তুর্কি সংস্কৃতির গভীর সম্পর্ক আছে। উইঘুররাও তুর্কি ভাষায় কথা বলে। তাই তুরস্কই একমাত্র দেশ যারা জিনজিয়াং এর পরিস্থিতি নিয়ে সবসময় উদ্বেগ প্রকাশ করে থাকে। তবে চীন সবসময়ই তুরস্কের এই ধরনের তৎপরতাকে অন্য অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো হিসেবে বর্ণনা করে থাকে।
Add Comment