Home » কবুতর পালন করার সঠিক পদ্ধতি – কবুতর পালনের আগে অবশ্যই জেনে নিন -2023
নিবন্ধ

কবুতর পালন করার সঠিক পদ্ধতি – কবুতর পালনের আগে অবশ্যই জেনে নিন -2023

কবুতর পালন করার সঠিক পদ্ধতি

কবুতর পালন করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত এই লেখায় তুলে ধরা হয়েছে। কবুতর পালনের বিভিন্ন পদ্ধতি, কবুতরের বাসস্থান নির্বাচন, খাঁচা তৈরির কলাকৌশল, কবুতরের সুষম খাদ্য, রোগ ব্যবস্থাপনা সহ যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে সংক্ষেপে আপনার জন্য তুলে ধরা হয়েছে।

আমাদের দেশে গৃহপালিত পাখির মধ্যে কবুতর অত্যন্ত জনপ্রিয়। অনেকেই শখের বশে কবুতর পালন করেন আবার অনেকে কবুতর পালেন বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে। আমাদের দেশে কয়েকটি বড় পরিসরের কবুতরের খামারও রয়েছে। কবুতর পালন খুবই লাভজনক। কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মুরগির চেয়ে অনেক বেশি। কবুতর পালনে খরচ কম কিন্তু দাম ভালো পাওয়া যায়। সঠিক পদ্ধতিতে কবুতর পালন করলে আপনি অবশ্যই সফল হতে পারবেন। তাই আপনি যদি কবুতর পালতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার কবুতর পালন করার সঠিক পদ্ধতি জেনে নেওয়া উচিৎ।

কবুতর পালন করার সুবিধাসমূহ

আপনি হয়তো ভাবছেন, কবুতর কেন পালতে যাব। আমার লাভ কী? তাই কবুতর পালন করার প্রধান কিছু সুবিধা ও উপকারিতা নিচে তুলে ধরলাম:
১) কবুতর পালনে পুঁজি কম লাগে।
২) কবুতর পালনে খরচ কম, তাই লাভ বেশি।
৩) এক জোড়া কবুতর বছরে ২০ টিরও বেশি বাচ্চা দেয়।
৪) কবুতরের থাকার জন্য বেশি জায়গার প্রয়োজন পড়ে না। তাই বেশি জমি বা জায়গার প্রয়োজন পড়ে না।
৫) কবুতরের গড় আয়ু প্রায় ১০ বছর এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি।
৬) আপনি কবুতরের বিষ্ঠা চাইলে জৈবসার হিসেবেও ব্যবহার  করতে পারবেন।
৭) কবুতরের মাংস খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। এটি আমিষের চাহিদাও মেটায়।
৮) যারা শখ করে কবুতর পালেন তাদের কাছে এটি বিনোদনের মাধ্যম।

কবুতর পালন করার সঠিক পদ্ধতি (বিস্তারিত দিকনির্দেশনা)

সারা পৃথিবীতে প্রায় ১২০ প্রজাতির গৃহপালিত কবুতরের জাত রয়েছে। বাংলাদেশে ২০ জাতের কবুতর আছে। দেশি জাতের কবুতর পালনে খরচ কম এবং এদের পালন করা তুলনামূলক সহজ। বিদেশি জাতের কবুতরও আমাদের দেশে পালন করা হয়। তবে এদের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন পরে। কিন্তু যেহেতু বিদেশি জাতের কবুতরগুলোর চাহিদা অনেক বেশি এবং অনেকক্ষেত্রে কয়েকগুণ দাম পাওয়া যায়। তাই বিদেশি জাত পালন করেও লাভবান হওয়া যায়।

কী কী পদ্ধতিতে কবুতর পালন করা যায়

তিনটি পদ্ধতিতে কবুতর পালন করা যায়। যথা: মুক্ত পদ্ধতি, অর্ধ-আবদ্ধ পদ্ধতি ও আবদ্ধ পদ্ধতি। নিচে এই তিনটি পদ্ধতির বিস্তারিত বিবরণী তুলে ধরা হলো:

(১) মুক্ত পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে কবুতর সকালবেলা বাসা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সারাদিন কবুতর বাইরেই থাকে। এদিক সেদিক উড়ে বেড়ায় ও প্রাকৃতিক খাবার খায়। সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে আসে। খাচাঁর বাইরে খাবার ও পানি থাকতে হবে। তবে কবুতর তার খাবারের বড় একটা অংশ প্রকৃতি থেকে নিজেই সংগ্রহ করে নেয়।তবে খাচাঁর দরজা অবশ্যই খোলা রাখতে হবে। যাতে কবুতর চাইলে দিনের বেলায়ও মাঝে মাঝে ঘরে আাসতে পারে। গ্রাম অঞ্চলে যেখানে জনবসতি কম সেখানে এই পদ্ধতি অত্যন্ত্য কার্যকর ও ফলপ্রসু।

(২) অর্ধ-আবদ্ধ পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে কবুতরের পাখা বেধেঁ রাখা হয় বা কেটে ছোট করে দেওয়া হয়। তবে যেহেতু কবুতর উড়তে পারে না তাই বাড়ির উঠোন বা আঙিনার বাইরে যেতে পারে না। বাড়ির আঙিনায় বা খাচাঁর বাইরে খাবার ও পানির ব্যবস্থা রাখতে হয় এবং এখান থেকেই কবুতর খাবার খায়। খাচাঁর দরজা খোলা রাখতে হয় যাতে কবুতর চাইলে খাচাঁয় এসে বসতে পারে। আপনি যদি কম সংখ্যক কবুতর পালন করেন তাহলে প্রায় সব জায়গাতেই এই পদ্ধতি কার্যকর।

(৩) আবদ্ধ পদ্ধতি: ঘরের ভেতর আবদ্ধ অবস্থায় কবুতর পালন করা হয়। বহুতল খাঁচা বা খোপের ভেতর কবুতর থাকে। ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। খাচাঁর বাইরেই খাবার ও পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে যাতে কবুতর খাচাঁর ভেতর থেকেই খাবার খেতে পারে। বড় বড় খামার বা শহরঞ্চলে যেখানে জায়গার সংকট সেখানে আবদ্ধ অবস্থায় কবুতর পালন অত্যন্ত্য কার্যকর।

কবুতরের বাসস্থান নির্বাচন

কবুতরের বসস্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কারণ বাসস্থানের উপর কবুতর পালনের সফলতা অনেকটাই নির্ভর করে। আপনি যদি ঘরের বাইরে খোলা জায়গায় বা বাড়ির উঠানে কবুতর পালন করতে চান তাহলে কবুতরের ঘর বা খাঁচা মাটি থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট উঁচুতে বানাতে হবে। যাতে কবুতর বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রানী যেমন কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর, শিয়াল, বেজি ইত্যাদির আক্রমন থেকে রক্ষা পায়। ঘরের ভেতরে নিরাপদ জায়গায় কবুতর পালনের ক্ষেত্রে কবুতরের ঘর এক ফুট উঁচু হলেই যথেষ্ট।

কবুতরের ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। দিনের কয়েক ঘন্টা ঘরে সরাসরি সূর্যের আলো প্রবেশ করবে এমনভাবে ঘর তৈরি করা গেলে সবচেয়ে ভালো হয়। কারন সূর্যালোক কবুতরের দেহে ভিটামিন-ডি তৈরিতে সাহায্য করে। আবার ঘরকে জীবানুমুক্ত রাখতেও সাহায্য করে। তাছাড়া আবদ্ধ ঘরে কবুতরের স্বাস্থ্যহানী ঘটে যার ফলে কবুতরের বিভিন্ন রোগ বালাই হতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে কবুতরের ঘরে বা খাঁচায় কোনভাবেই বৃষ্টির পানি প্রবেশ করতে না পারে। বৃষ্টির পানিতে ভিজে কবুতরের মারাত্বক স্বাস্থ্যহানী ঘটতে পারে। এমনকি ঠান্ডা লেগে কবুতরের মৃত্যুও হতে পারে।

কবুতরের প্রধান শত্রু রোগবালাই এবং অধিকাংশ রোগবালাই হয় অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতার কারনে। সপ্তাহে অন্তত ১ দিন কবুতরের বৃষ্ঠা অবশ্যই পরিষ্কার করতে হবে। আপনার হাতে যদি সময় থাকে তাহলে প্রতিদিনই খাঁচা পরিষ্কার করুন। সপ্তাহে কমপক্ষে ২ বার কবুতরকে গোসল করান।

কবুতরের খাঁচা তৈরির পদ্ধতি

যারা কম সংখ্যক কবুতর পালেন তারা ঘরের বারান্দায় বা দালানের কার্নিশে টিন বা কাঠের বাক্স বা মাটির হাঁড়ি বেঁধে ঝুলিয়ে কবুতর পালন করতে পারেন। এতে আপনার খরচ অনেকটাই কমে যাবে।

তবে বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে কবুতর পালনের ক্ষেত্রে খাঁচা বা বহু স্তরবিশিষ্ট খোপ তৈরি করে নেওয়াই ভালো। বাজারে এর জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের বাঁশের ও লোহার শিকের খাঁচা পাওয়া যায়। আপনি চাইলে সেখান থেকে আপনার পছন্দসই খাঁচা কিনে নিতে পারেন। অথবা অর্ডার দিয়ে বানিয়েও নিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে খরচ কিছুটা বেশি হতে পারে। বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে কবুতর পালন করলে খাঁচা তৈরি করে নেওয়াই ভালো। কারন খাঁচার উপরেও আপনার ব্যবসার সফলতা অনেকটা নির্ভর করবে।

কবুতরের খাঁচার মাপ:

বাঁশ বা লোহার শিক দিয়ে কবুতরের খাঁচা তৈরি করা যায়। যাদের কবুতরের খামার রয়েছে তারা বহুতল ও বহুখোপবিশিষ্ট খাঁচা তৈরি করে নিতে পারেন। প্রতিটি খোঁপে ১ জোড়া কবুতর থাকতে পারবে। প্রতিটি খোপের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ৫০ সেন্টিমিটার হতে হবে এবং উচ্চতা থাকবে ৩০ সেন্টিমিটার। এই মাপের খোপ তৈরি করলে এক জোড়া কবুতর স্বাচ্ছন্দ্যে ঐ খোপের ভেতর থাকতে পারবে যা তাদের স্বাস্থ্যেরর জন্য অনুকুল। প্রতিটি খোপের জন্য ১০-১০ সেন্টিমিটার একটি দরজা দিতে হবে। বাঁশ বা লোহার শিক যাই দিয়ে খাঁচা তৈরি করেন না কেন প্রতিটি শিকের মাঝে ১.৫-২ ইঞ্চি ফাঁকা রাখবেন যাতে একটি প্রাপ্তবয়স্ক কবুতর সহজেই খাঁচার বাইরে মাথা বের করতে পারে। প্রতি তলায় ১২ সেন্টিমিটার বারান্দা দিতে হবে। খাঁচায় বারান্দা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বারান্দা থাকলে খাঁচার ভেতরে খাবার বা পানি রাখার বদলে খাঁচার বাইরেই বারান্দায় খাবার দিতে পারবেন। খাঁচার ভেতরে খাবার বা পানি রাখলে অনেক সময় কবুতর পানিতে পা দেয় বা বৃষ্ঠা লেগে খাবার নষ্ট হয়। এই খাবার পানি খেয়ে কবুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই ভেতরে খাবার বা পানি না রেখে খাঁচার বাইরে বারান্দায় কবুতরকে খাবার পানি দেওয়া উচিৎ। বহুতলবিশিষ্ট খাঁচার ক্ষেত্রে অবশ্যই ট্রে রাখার ব্যবস্থা রাখবেন যাতে উপরের তলার কবুতরের বৃষ্ঠা কোনভাবেই নিচের তলায় না পড়ে।
এভাবে খাঁচা তৈরি করলে আপনি কবুতরের জন্য একটি আদর্শ খাঁচা পাবেন যা আপনার কবুতর পালনে সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বাড়িয়ে দিবে।

কবুতরের জন্য সুষম খাদ্য

একটি প্রাপ্তবয়স্ক কবুতর দৈনিক গড়ে ৩০-৫০ গ্রাম খাবার খায় এবং গড়ে ৬০-১০০ মিলিলিটার পানি পান করে। তবে শীতকালে এর পরিমান কিছুটা কম থাকে। একটি প্রাপ্তবয়স্ক কবুতরের ওজন থাকে ৪০০-৬০০ গ্রাম। একে দৈনিক তার দেহের মোট ওজনের ১০ ভাগের ১ ভাগ খাবার দেওয়া উচিৎ। কবুতর যাতে ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাতে বেশি হয় সেজন্য খাবারে শর্করা, আমিষ, চর্বি, খনিজ সম্পদ ও বিভিন্ন ভিটামিন উপাদান থাকা প্রয়োজন এবং পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করা উচিৎ।

কবুতরকে যে সকল দানাদার খাদ্য খাওয়াবেন তা আগে অবশ্যই রোদে শুকিয়ে নিবেন। নিম্নে কবুতরের জন্য সুষম ও আদর্শ দানাদার খাদ্য মিশ্রন তৈরির উপায় তুলে ধরা হলো। নিম্নের তালিকায় ১০০ গ্রাম খাদ্য মিশ্রন তৈরির পদ্ধতি দেওয়া আছে। আপনি আপনার খামারের কবুতরের সংখ্যা অনুযায়ী মিশ্রন তৈরি করে নিবেন।
১) ভূট্টার গুড়া – ৩৫ গ্রাম
২) গমের গুড়া – ২৫ গ্রাম
৩) সরিষা দানা – ১৫ গ্রাম
৪) ছোলা ভাঙ্গা – ১৫ গ্রাম
৫) কাঁচা শাক-সবজি কুঁচি – ৫ গ্রাম
৬) চালের কূঁড়া – ৪.৫ গ্রাম
৭) লবন – ০.৫ গ্রামগ্রাম

কবুতরের ছানার দ্রুত বেড়ে ওঠা ও হাড় শক্ত হওয়া এবং পূর্ণবয়স্ক কবুতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ডিমের খোসা শক্ত হওয়ার জন্য মাঝে মাঝে কবুতরকে ঝিনুকের খোসার গুড়া, হাড়ের গুড়া, চুনাপাথর, লবন মিশিয়ে গ্রিট মিক্সচার তৈরি করে খাওয়ালে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়।

যারা গ্রাম অঞ্চলে মুক্ত পদ্ধতিতে কবুতর পালন করেন তারা কবুতরকে প্রচলিত খাবার খাওয়ালেই চলবে। যেমন ধান, চালের কূঁড়া, গম ইত্যাদি। তাও কেবল ১৫-২০ গ্রাম। এতটুকু খাবারই মুক্ত/দেশী কবুতরের জন্য যথেষ্ট। কারন বাকি খাবার তারা প্রকৃতি থেকে নিজেরাই সংগ্রহ করে নিতে পারে। এতে আপনার খরচও বাচবে এবং কবুতরও পর্যাপ্ত পুষ্টি পাবে।

কবুতরের রোগ ব্যবস্থাপনা

কবুতরের প্রধান শত্রু রোগবালাই। অধিকাংশ খামারিই কবুতর পালনে সফল হতে পারেন না রোগের আক্রমনের কারনে। আপনি যদি রোগের কারনে কবুতরের মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে পারেন তাহলে আপনি অবশ্যই সফল হবেন।

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রোগ-জীবানুর আক্রমন বেশি হয়। তাই কবুতরের খাঁচা ও ঘর নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। কিছুদিন পরপর বৃষ্ঠা পরিষ্কার করতে হবে এবং কবুতরকে গোসল করাতে হবে। কবুতরের যত্ন নেওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিবেন ও মাক্স পরে নিবেন। যত্ন নেওয়া হয়ে গেলে বের হয়ে আবার হাত ধুয়ে নিবেন। এতে করে শুধু কবুতরই রোগ থেকে বাচবে না বরং আপনিও সুরক্ষিত থাকবেন। খামারে অযাচিত মানুষের চলাচল বন্ধ করুন। কবুতর যাতে পর্যাপ্ত সূর্যালোক ও বাতাস পায় সে ব্যবস্থা করুন। কবুতরকে সবসময় বিশুদ্ধ খাবার ও পানি খেতে দিন। শুধুমাত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাই ৮০% রোগ-জীবানুর আক্রমন থেকে কবুতরকে রক্ষা করবে।

কবুতরের অধিকাংশ রোগই সংক্রামক হয়। তাই কোন কবুতর অসুস্থ হলে সবার আগে ঐ অসুস্থ কবুতরটিকে আলাদা করে সরিয়ে ফেলতে হবে। তা না হলো রোগটি অন্যান্য কবুতেরর মাঝেও ছড়িয়ে পরতে পারে এবং বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

নিম্নে কবুতরের কিছু রোগের লক্ষন, প্রতিকার ও চিকিৎসা তুলে ধরা হলো:

১) বসন্ত/পক্স রোগ:
লক্ষন: চোখ, পা ও ঠোঁটের চারপাশে ক্ষত দেখা দেয়। ও পালক পরে পালকের ঘনত্ব কমে যায়।
চিকিৎসা: ভিটামিন এ ও সি ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে। প্রয়োজনে এমাইনো এসিড ও এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হবে।

২) পরজীবী রোগ:
লক্ষন: শারীরিক দুর্বলতা, খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া, ডায়রিয়া হওয়া ও পুষ্টিহীনতায় ভোগা ও অবশেষে মৃত্যু
চিকিৎসা: এমাইনো এসিড, ভিটামিন ও মিনারেল প্রিমিক্স খাওয়ানো

৩) কলেরা:
লক্ষন: সবুজ বা হলুদ পায়খানা, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, খাওয়ার অরুচি ও ওজন কমে যাওয়া।
চিকিৎসা: কসুমিক্স প্লাস বা ট্যারামাইসিন ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে।

৪) আমাশয়:
লক্ষন: রক্ত মিশ্রিত মলত্যাগ, খাওয়ার অরুচি ও শারীরিক দুর্বলতা।
চিকিৎসা: ইএসবি-৩/ এলুড্রন/ মবাজিন পানিতে মিশিয়ে ৩ দিন খাওয়াতে হবে।

৫) কৃমি রোগ:
লক্ষন: ডায়রিয়া, ক্ষুধা ও পিপাসা বৃদ্ধি, ওজন হ্রাস ও দুর্বলতা।
চিকিৎসা: মেবেন/ এডিপার/ কুপেইন/ ইউভিলন ট্যাবলেট প্রতি ৩ মাস পরপর খাওয়াতে হবে। এগুলো সবই কৃমিনাশক ঔষধ।

তবে কবুতর অসুস্থ হলে নিজে ঔষধ কিনে এনে খাওয়ানোর চেয়ে কোন পশু চিকিৎসকের সরনাপন্ন হওয়াই উত্তম। কারন ভুল চিকিৎসা দেওয়া হলে হীতে বিপরীত হতে পারে এবং কবুতরের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

কবুতর পালন করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে তো জানলেন। কবুতর পালনে ঝুঁকি ও সম্ভাবনা দুটোই রয়েছে। তবে বিশাল সম্ভাবনার বিপরীতে ঝুঁকি সামান্য। সঠিক পদ্ধতিতে কবুতর পালন করলে আপনি অবশ্যই সফল হবেন ও আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।

Add Comment

Click here to post a comment

এই সপ্তাহের সর্বাধিক দেখা ভিডিও:

বাংলাদেশীদের জন্য সেরা অ্যাপ

BD MEDIA MATE APP SCREENSHOT

আমাদের ওয়েবসাইটের জনপ্রিয় পোস্টগুলি:

BEST APP FOR US PEOPLE

US MEDIA MATE APP
Don`t copy text!