Home » চীন-রাশিয়া সীমান্ত যুদ্ধ : রাশিয়ার পারমানবিক হামলা থেকে যেভাবে চীনকে বাচিয়েছিলো আমেরিকা
নিবন্ধ

চীন-রাশিয়া সীমান্ত যুদ্ধ : রাশিয়ার পারমানবিক হামলা থেকে যেভাবে চীনকে বাচিয়েছিলো আমেরিকা

একটি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র

বিশ্ব রাজনীতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল । এক দেশের সাথে আরেক দেশের সম্পর্ক যেকোন মূর্হূর্তে পাল্টে যেতে পারে । বর্তমানে চীন-রাশিয়া-আমেরিকার যেমন সম্পর্ক আমরা দেখি একসময় তেমন ছিলোনা । এখন যেই চীন-রাশিয়ার মাঝে মধুর সম্পর্ক একসময় এরাই একে অপরকে পৃথীবি থেকে নিশ্চিন্হ করে ফেলতে চেয়েছিলো । জড়িয়েছিলো ভয়াবহ সংঘর্ষে । এখানে আমরা চীন-রাশিয়ার সীমান্ত যুদ্ধ এর এমনই একটি ঘটনা আপনাদের জানাবো ।

রাশিয়া ও চীনের সিমান্তে একটি দ্বীপ “ঝেনবাউ”কে নিয়ে বিরোধের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুদ্ধের সূত্রপাত । তবে অনেক ইতিহাসবিদ ধারনা করে থাকেন যে, দ্বীপ নিয়ে বিরোধের ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে চীন অনেকটা ইচ্ছা করেই পরিকল্পিতভাবে সংঘর্ষে জড়িয়েছিলো । ধারনা করা হয় যে চীনের রাজনীতিবিদেরা দেশের ভিতরে নিজেদের জনপ্রিয়তা বাড়াতে, রাশিয়া সহ অন্যান্য প্রতিবেশিদের নিজের শক্তি বোঝাতে এবং বিশ্ব রাজনীতিতে সবার দৃষ্টি আকর্ষন, নিজেদের শক্তি প্রদর্শন, পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে আসা ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নিজেদের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য অনেকটা অপ্রয়োজনীয় ভাবেই এই সংঘর্ষ শুরু করেছিলো । অবশ্য চীন এই অভিযোগ কখনো স্বিকার করেনা । সেসব কথা থাক । এত দীর্ঘ ইতিহাস আলোচনা করা আমাদের উদ্দ্যেশ্য নয় । আমরা সংক্ষেপে মূল ঘটনা তুলে ধরছি ।

চীন-রাশিয়া সীমান্ত যুদ্ধ এর সংক্ষিপ্ত বর্ননা –

সময়টা ছিলো ১৯৬৯ সাল । চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির এক কন্টিনজেন্ট সেনা তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) বর্ডার পোস্ট “যেনবাও” আইল্যান্ডে আক্রমন চালিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের ডজন খানেক সেনা কে হত্যা করে এবং সমপরিমান আহত করে।

এতে চীন – সোভিয়েত সম্পর্ক দ্রুত খারাপ হয়ে যায়। দুই দেশই সিমান্তে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে । প্রায় দু- সপ্তাহ প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষ চলে । অবস্তা দ্রুত “ফুল স্কেল” যুদ্ধে রুপ নিতে থাকে।
এমতাবস্থায় দু দেশই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় । রেড আর্মি তাদের যুদ্ধ প্রস্তুতি নিতে শুরু করে বিপরীতে পিএলএ ও তাদের সৈন্যবাহীনি প্রস্তুত করে।

সিমান্তে এক সপ্তাহ সংঘর্ষের পর দুই দেশের তিক্ততা এমন পর্যায়ে পৌছায় যে সোভিয়েত ইউনিয়ন চীনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক পরমানু যুদ্ধের পরিকল্পনা নেয় এবং হামলা করার জন্য পারমানবিক বোমা বহনকারি ক্ষেপনাস্ত্র মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় ।
চীনের জাতীয় নেতারাও যুদ্ধে টিকে না থাকতে পারলে শেষ উপায় হিসেবে সোভিয়েতে পরমানু হামলার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়।

উল্লেখ্য সোভিয়েত ইউনিয়ন সেই সময় চীনের চাইতে সমর প্রযুক্তিতে অনেক দুর এগিয়ে ছিল । একেবারে দূৃর্বল না হলেও এখনকার মতো চীনের তখন রাশিয়ার সাথে টক্কর দেয়ার মতো এতটা সামরিক শক্তি ছিলোনা তা বলাই যায়।
তখন বিশ্বে আরেক টি পরমানু যুদ্ধের আশংকা করা হয় তবে শেষ পর্যন্ত আর তা হয় নি।

রাশিয়ার কুটনৈতিকরা এই বিষয়ে আমেরিকাকে চুপ থাকার আহবান জানায় । কিন্তু আমেরিকা জানায় যে তারা এমন সংকটপূর্ন পরিস্থিতিতে চুপ করে থাকবে না । কারন সোভিয়েত ইউনিয়ন চীনে পরমানু হামলা চালালে নিশ্চিতভাবে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে । তাই এমন কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে আমেরিকা সোভিয়েত ইউনিয়নে পারমানবিক হামলা চালানোর হুমকি দেয় ।

যুক্তরাষ্ট্র সাফ জানায় আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না করে চীনের উপর পরমানু হামলা করা হলে “তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ” শুরু হবে এবং তখন আমেরিকা সোভিয়েত ইউনিয়নে পরমানু হামলা চালাবে। আমেরিকা সোভিয়েত ইউনিয়নের ১৩০টি শহরে পরমানু হামলার জন্য তালিকাভুক্ত করে ।

আমেরিকা তখন এক ঢিলে কয়েকটি পাখি মারতে চাইছিলো । তারা অন্যদের মারামারি থামিয়ে সবার কাছে এই পৃথীবির দায়িত্ববান অভিভাবক হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করার পাশাপাশি সোভিয়েত ইউনিয়নকে চাপে ফেলতে চাইছিলো এবং চীনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইছিলো ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি ও রাজনৈতিক চাপের কারনে সোভিয়েত ইউনিয়ন চীনে পরমানু হামলা করা থেকে ফিরে আসে (আমেরিকা তখন চীনকে রাশিয়ার হাত থেকে বাচিয়ে দেয়)।

এই ঘটনায় সোভিয়েত ইউনিয়নের আনুমানিক ৬০ জন সৈন এবং চীনের ৭০ জন সৈন সহ প্রায় ১০০০ জন প্রান হারায় । এছাড়া চীন-রাশিয়া সীমান্ত যুদ্ধ সংগঠিত হওয়ার এই ঘটনায় আরো বহু মানুষ আহত হয় ।

এই সপ্তাহের সর্বাধিক দেখা ভিডিও:

বাংলাদেশীদের জন্য সেরা অ্যাপ

BD MEDIA MATE APP SCREENSHOT

আমাদের ওয়েবসাইটের জনপ্রিয় পোস্টগুলি:

BEST APP FOR US PEOPLE

US MEDIA MATE APP
Don`t copy text!