প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারি মাননিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তার ঐ মন্ত্রনালয়ের কার্যাবলি সম্পাদন করার জন্য ঐ মন্ত্রনালয়ে অফিস করেন । এসময় মায়ানমারকে নিয়ে তিনি কিছু বক্তব্য দেন যা মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে । বিভিন্ন ওয়েবসাইটে মানুষ তার কথার সাথে দ্বিমত পোষন করেন ।
এখানে কয়েকজনের মন্তব্য তুলে ধরা হলো ।
আরাফাত হোসাইন নামের একজন মন্তব্য করেন- প্রধানমন্ত্রী আজ প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় পরিদর্শন করার সময় বলেছেন, “মিয়ানমার যেহেতু আমাদের প্রতিবেশী, আমরা কখনও তাঁদের সঙ্গে সংঘাতে যাব না’ !!! ওমা ! তাহলে কি আপনি ইংল্যান্ড, আমেরিকা, মেক্সিকো সহ বিভিন্ন দূরবর্তী দেশের সাথে সংঘাতে যাবেন নাকি ?
সংঘাতে যাবেন নাকি যাবেন না সেটা আগে থেকেই নির্ধারন করে রাখার মতো কোন বিষয় নয় । যদি সংঘাতে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তাহলে তো সংঘাতে যেতেই হবে আর যদি তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় তাহলে সংঘাতে যাবোনা। মায়ানমার যদি আমাদের জাতীয় স্বার্থ ক্ষুন্ন করে তাহলেও কি আপনি বসে থাকবেন ? আপনি যেটা বলেছেন সেটা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বা ইউনিসেফের মুখে মানায়, রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর মুখে মানায় না ।
আপনি যদি দেশের ভিতরের শত্রু তথা জংগি, সন্ত্রাসি, মাদক ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নিতে পারেন তাহলে দেশের বাইরের শত্রুদের বেলায় জিরো টলারেন্স নিবেন না কেন ? তাদের বেলায় কেন নমনীয়তা দেখাবেন ?
কেউ যদি আগেই সিদ্ধান্ত নেয়, “আমি কখনো অপারেশন করবোনা” তাহলে সে কখনো অসুখে আক্রান্ত হলে কি করবে ? অপারেশন না করে রোগে কষ্ট পেতে থাকবে বা রোগে ভুগতে ভুগতে মারা যাবে ? তবুও তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ি অপারেশন করবেনা ?
আপনার কথায় মায়ানমার আরো লাই পাবে এবং আরো আগ্রাসী হবে । অথচ আপনার এমনভাবে কথা বলা উচিত যেন মায়ানমার চাপে থাকে এবং বাংলাদেশকে নিয়ে উল্টা পাল্ট চিন্তা করার সাহস না পায় ।
চোর কিন্তু প্রতিদিন চুরি করেনা, তবুও চৌকিদারকে প্রতিদিনই একটু পর পর বাশি বাজাতে হয় যেন চোর চুরি করার সাহস না পায় । সব সময় অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করা লাগেনা, কথা দিয়েও যুদ্ধের আগেই যুদ্ধ জয় করা সম্ভব ।
পৃথীবির বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীরা শত্রুদের বা প্রতিযোগিদের শুধু কথার মাধ্যমেই চাপে রাখে । ইরানকে দেখুন, শুধু দৃড়চিত্তে শত্রুদের সামনে দাড়িয়ে দাপটের সাথে কথা বলতে পারে বলেই তারা আজো টিকে আছে ।
আমেরিকা ইসরাইল ইরানকে হুমকি দিলে তারাও পাল্টা বড় বড় কথা বলে হুমকি দেয় অথচ তারা আমেরিকা বা ইসরাইলের চেয়ে অনেক দূর্বল । শুধু কথার জোরেই ইরান এখনো টিকে আছে । এছাড়া ভারত-পাকিস্তান, চীন-জাপান, উত্তর কোরিয়া-দক্ষিন কোরিয়া, আমেরিকা-রাশিয়া সহ বিভিন্ন দেশ শুধু কথার মাধ্যমেই শত্রুকে সবসময় চাপে রাখে ।
আসওয়াদ হোসেন আবীর নামের একজন মন্তব্য করেন- যুদ্ধ করার জন্য নয়, বরং যুদ্ধ যেন না হয় সেজন্য শক্তির ভারসাম্য দরকার । বাংলাদেশ এর সামরিক শক্তি বাড়ানো হোক । প্রধানমন্ত্রীর নমনীয় কথায় মায়ানমারের সাহস বেড়ে যাবে ।
সালেহ আহমেদ নামের আরেকজন ফেসবুকে মন্তব্য করেন- আমরা গায়ে পরে যুদ্ধ করতে চাইনা । তবে সেরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে উপযুক্ত জবাব দেয়ার ক্ষমতা রাখতে হবে । জবাব দেয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পরও জবাব না দিলে সেটাকে দূর্বলতা ধরা হয় ।
বর্তমানে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী শক্তির দিক থেকে মায়ানমারের চাইতে অনেক পিছিয়ে পরেছে । বিশেষ করে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বাংলাদেশ পিছনে পরে আছে ।
Add Comment