Home » বাসর রাতের গল্প (শিক্ষণীয়+মজার)
নিবন্ধ

বাসর রাতের গল্প (শিক্ষণীয়+মজার)

বিয়ে, বাসর রাত, জীবনসঙ্গী

বাসর রাতের গল্প মানেই অন্যরকম কিছু ! আমাদের সবার মনেই এ রাত নিয়ে একধরনের অজানা অনুভূতি কাজ করে । এইখানে আমরা FANCIM.COM এর পাঠকদের জন্য কয়েকটি আলাদা স্বাদের বাসর রাতের গল্প তুলে ধরেছি । এখানে তুলে ধরা প্রতিটি গল্প ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতি ও ঘটনার উপর ভিত্তি করে লেখা । আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে । চলুন তবে শুরু করা যাক ।

এরেন্জ ম্যারেজ

বিয়ের আগে বাসর রাতের গল্প কেমন হবে সেটা নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছি । অবশেষে আজ সেই দিনটি চলে এলো । মা বাবার পছন্দমতোই বিয়েটা করে ফেললাম। আমি যখন বাসর ঘরে ঢুকতে যাবো, ঠিক সেই মুহুর্তে দরজার সামনে এসে দাড়িয়ে গেলাম। বুকের ভেতর হার্টবিটটা যেন ক্রমশ বাড়তেই লাগলো। জীবনে প্রথম কোনো মেয়ে মানুষের কাছে যাবো..! তাও আবার একই ঘরের মধ্যে..! ভেবে কেমন যেন ভয় ভয় করতে লাগলো আমার..!

ভাবিরা, বন্ধুরা আমার অবস্থা দেখে আমাকে জোর করে ঠেলে ঢুকিয়ে দিলো বাসর ঘরে। তারপর ওরা বাহির থেকে দরজা টেনে দিলো। দেখি লাল বেনারসি পরে মাথায় ঘোমটা টেনে বসে আছে আমার বৌ। আমি আস্তে আস্তে তার দিকে এগিয়ে গেলাম। কাছে যেতেই বৌ আমাকে সালাম দিলো। সালামের উত্তর দিতে গিয়ে গলাটা আমার আটকে গেল! ভয়ে যেন গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে..! এমনসময় নতুন বৌ আমার দিকে পানির গ্লাস বাড়িয়ে দিয়ে বললো নেন পানি খান আসলে এই মুহুর্তে আমার পানির খুব প্রয়োজন ছিলো। আমি ঢকঢক করে একগ্লাস পানি খেয়ে নিলাম। আস্তে করে বললাম থ্যাংকস ।
বৌ নরম সুরে বললো থ্যাংকস বলতে হয়না। বলেন শুকরিয়া। আমিও তার বাধ্যগত হয়ে বললাম শুকরিয়া ।

দরজাটা লক করে আসেন। আমি আস্তে আস্তে গিয়ে রুমের দরজাটা লক করে আসলাম। তারপর বৌ আমাকে প্রশ্ন করলো আপনার কি অজু করা আছে..?
না নেই ।
তাহলে যান অজু করে আসেন।
আমি মনে মনে বিবাহিত বন্ধুদের গালি দিলাম। বাসরঘরে যে অজু করে ঢুকতে হয়, যেই শালারা বিয়ে করছে সেই শালারা তো আমাকে বলে দেয়নি..! তাহলে তো বৌয়ের কাছে ছোট হতে হতোনা..!

আমি ওয়াশরুমে গিয়ে অজু করে আসলাম। তারপর বৌ আমায় বললো চলেন দুজনে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে আমাদের নতুন জীবনের শুরু করি। নামাজ পড়া শেষ করে দুজনে খাটের উপর বসলাম। তারপর সে আমাকে বললো আপনি কি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন..?
না, মাঝে মধ্যে পড়ি ।
এখন থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বেন। সজ্ঞানে এক ওয়াক্ত নামাজ কাজা করবেননা।
আচ্ছা ঠিক আছে। মনে মনে ভাবছি, বৌ তো দেখি আমাকে হুকুম করেই যাচ্ছে। করুক, খারাপ কিছু তো বলছেনা! এমন সময় বৌ বললো আজ সারারাত দুজনে গল্প করবো। এবার আপনার ছোটবেলার গল্প বলেন।

তারপর আমি বলবো মহা বিপদে পড়ে গেলাম। কি গল্প বলবো এখন! আমি বললাম কি গল্প বলবো ? এমনসময় বৌ আমাকে এমন প্রশ্ন করে বসলো, যার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলামনা। বললো আপনি প্রেম ট্রেম করছেন কখনো ?

এই প্রশ্নের কি উত্তর দিবো ? ভাবলাম, কেবল নামাজ পড়ে আসলাম। মিথ্যা কথা কি করে বলি! তাই সত্য কথাই বৌকে বলতে লাগলাম “সত্যি কথা বলতে কি প্রেমের কথা মনে পড়লেই আমার হাসি পায়। আমি যখন ক্লাস এইটে পড়তাম, পাড়ার একটি মেয়েকে আমার ভাল লাগতো। নাম রেশমি। ভীষণ মায়ার চেহারা ছিলো ওর। ও পড়তো ক্লাস সেভেনে। লুকিয়ে লুকিয়ে রেশমিকে দেখা ছাড়া আমার কোনো কাজ ছিলোনা। স্কুল শেষে স্কুলের গেটে দাড়িয়ে থাকতাম ওর জন্য। রেশমি ওর বান্ধবীদের সাথে বাড়ি যেত, আর আমি পিছে পিছে হাঁটতাম।
কোনোদিন মুখফুটে বলতে পারিনি ভাললাগার কথা। মনে মনে কত যে প্ল্যান করেছিলাম ভাললাগার কথা রেশমিকে বলবো বলে। সে সাহস আর হয়ে ওঠেনি আমার। একদিন জানতে পারলাম রেশমি ওর খালাতো ভাইয়ের সাথে প্রেম করে। মনে একটা আঘাত পেয়ে সেখান থেকে কেটে পড়লাম।

এরপর ক্লাসের সবথেকে সুন্দরী মেয়ে সুলতানা। একসময় ওকে আমার ভাল লেগে যায়। একটা ক্লাসও মিস করতামনা সুলতানার জন্য। সুলতানা সবসময় ক্লাসের ফার্ষ্ট বেঞ্চে বসতো বলে আমিও সবার আগে ক্লাসে যেতাম শুধু ফার্ষ্ট বেঞ্চে বসার জন্য। ক্লাসে বসে লুকিয়ে লুকিয়ে শুধু সুলতানাকে দেখতাম। সুলতানাকে শুধু আমি না আরো অনেক ছেলেরাই পছন্দ করতো। যখন অন্য ছেলেরা আমার মতো সুলতানাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতো, মনে মনে ওদের উপর ভীষণ রাগ হতো। ওরা দেখবে কেন? শুধু আমিই দেখবো।
যখনই আমার সুলতানার চোখে চোখ পড়তো, সুলতানা মিটমিট করে হাসতো। তখন একটা ভাললাগা আমার মনটাকে নাড়িয়ে যেতো। ভাবতাম সুলতানাও বুঝি আমাকে পছন্দ করে..! একবার মনে মনে প্ল্যান করলাম, একটা চিঠি লিখে সুলতানাকে দিবো। সারারাত জেগে অনেক চিন্তা ভাবনা করে একটি চিঠি লিখেও ফেললাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, পকেট থেকে চিঠিটা বের করে সুলতানাকে দিতে সাহস হয়নি আমার। একদিন শুনলাম সুলতানার বাবা ট্রান্সফার হওয়াতে ওরা সবাই চলে গেছে নাটোর। মনের মধ্যে আরেকটা ধাক্কা খেলাম।

স্কুল লাইফ শেষ করে যখন কলেজে লাইফে পা দিলাম। ক্লাসের একটি সুন্দরী মেয়ে আমার মন কেড়ে নিলো।
নাম জিনিয়া। ভাবলাম স্কুল লাইফে যা হবার হয়েছে। এই মেয়ের সাথে আমার প্রেম করতেই হবে! কিন্তু সমস্যা তো ঐ একটাই। আল্লাহ আমাকে সেই সাহস দেয়নি যে, কোনো মেয়েকে খুব সহজভাবে বলে দিবো “আমি তোমাকে ভালবাসি” !! হা..হা..হা…! কলেজ লাইফে এসেও আরেকটি ধাক্কা খেলাম। আমি আসলে অনেকটাই বোকা..! তা না হলে কি করে ভাবলাম শহরের একটি মেয়ে অজো পাড়াগাঁও থেকে উঠে আসা আমার মতো একটি মফস্বলের ছেলের সাথে প্রেম করার জন্য এখনো নিজেকে সিঙ্গেল রেখেছে ? একদিন দেখলাম কলেজ শেষ করে জিনিয়া একটি ছেলের সাথে রিক্সায় উঠে রিক্সার হুট টেনে দিলো ! এভাবে প্রায় প্রতিদিন দেখতাম ছেলেটিকে জিনিয়ার জন্য অপেক্ষা করতে। তারপর জিনিয়াকে নিয়ে রিক্সায় চড়ে যেতে! পরে জানতে পারলাম ছেলেটিকে জিনিয়া ভালবাসে। বুকের মধ্যে ছোট একটি ব্যাথা অনুভব করতাম।

তারপর আর কোনো মেয়ের দিকে নজর দেইনি। আসলে আমার ভাললাগাগুলো ভাললাগা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিলো। কখনও ভালোবাসায় রুপান্তরিত হয়নি।”

বৌ আমার গল্প শুনে হেসে কুটিকুটি হয়ে গেল। তারপর হাসতে হাসতে বললো আপনি তো আসলেই বোকা..!
লজ্জিত হয়ে বললাম, আসলেই আমি বোকা ।
ভাগ্যিস বোকা ছিলেন। তা না হলে আমার ভালোবাসার ভাগ কত মেয়েই না আপনার কাছ থেকে নিয়ে নিতো..! আমার ভালোবাসার ভাগ যদি সত্যিই অন্য কোনো মেয়েকে দিতেন, আপনার ঠ্যাং ভাঙতাম আমি। আপনার কপাল ভালো। আমি কিন্তু খুব রাগী বউ !
বলেন কি?
জ্বী! আমি আজ পর্যন্ত কোনো ছেলের সাথে প্রেম করিনি শুধু স্বামীকে ভালোবাসবো বলে। স্বামীর সাথে প্রেম করবো বলে । আমার সব ভালোবাসা শুধু আপনার জন্য রেখে দিয়েছি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে সবসময় মনের মতো একজন স্বামী চেয়েছি। মনে হয় আল্লাহ আমার কথা রেখেছেন।
আমিও অনেকটা আবেগপ্রবন হয়ে বললাম আল্লাহর কাছে লাখোকোটি শুকরিয়া, বিয়ের আগে তিনি কোনো মেয়েকে ভালোবাসার সুযোগ দেননি।

হুমম… এখন থেকে শুধু আমাকেই ভালোবাসবেন।
আচ্ছা, ঠিক আছে। কিন্তু তুমি আমাকে আপনি আপনি করছো কেন..?
আপনি তো তুমি করে বলার অনুমতি দেননি। স্বামীকে তুমি করে বলার জন্য অনুমতির প্রয়োজন হয়..? এখন থেকে আর আপনি নয়। শুধু তুমি ।
আচ্ছা, তুমি করেই বলবো।
বৌয়ের হাতটি ধরার জন্য মনটা কেমন যেন আনচান করতে লাগলো। সাহস করে বলেই ফেললাম তোমার হাতটা কি একটু ধরতে পারি..?
বৌ আবার হেসে দিয়ে বললো তুমি এতো বোকা কেন হুম? বৌয়ের হাত ধরার জন্য অনুমতির প্রয়োজন হয়..?
সাহস করে বৌয়ের হাতটা ধরেই ফেললাম। তারপর বললাম আমি তোমার কাছে সারাজীবন বোকাই থাকতে চাই। আজ বোকা বলেই তোমার মতো ভালো একজন জীবন সঙ্গিনী পেয়েছি।
বৌ আমার হাত শক্ত করে ধরে রইলো। আমি মনেমনে আল্লাহকে লাখো কোটি শুকরিয়া জানালাম, তিনি আমাকে জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহারটি দান করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ্!!

অজানা ভয়

বাসর রাতের গল্প আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে। আজকে আমি আমার বাসর রাতের গল্প আপনাদের শোনাব ।
সব মেয়ের মত সেদিন আমার মনের ভিতরও একটু লজ্জা ও ভয় কাজ করছিল। তবে আমার ভয়টা একটু বেশিই ছিল। কারন বাসর রাতেই আমার এক বান্ধবী গর্ভবতী হয়ে যায় । ছেলেদের কোন বাছ-বিচার নেই । সেই কারনেই ভয়টা একটু বেশি ছিল।
রাত ১১টায় ও মানে আমার স্বামী আরাফাত রুমে আসে, তাকে দেখেই আমার শরীর ভয়ে ঠান্ডা হয়ে যায়। ভাবছিলাম এই বুঝি এসেই শুরু করে
দিবে। দাদি অনেকবার করে বলে দিয়েছিলো,”জামাই যখন ঘরে ডুকবে তখন পা ছুঁয়ে সালাম করবি” তাই অনিচ্ছা সত্বেও পা ছুঁয়ে সালাম করতে গেলাম অমনি ও আমাকে ধরে ফেললো। বললো “এই কি করো এই গুলা! তোমার স্থান আমার পায়ে না! আমার বুকে”।
কথাটা শুনে মনের ভিতর অদ্ভুত রকমের একটা প্রশান্তি পেলাম।

তারপরে ও আপন মনেই বলে গেল এই গরমের মাঝে এই রকম মোটা শাড়ি পরে আছ কেন ? এটা খুলে সুতির শাড়ি পর। এই বলে ও আমাকে একটা সুতি শাড়ি এনে দিল অন্য ঘর থেকে। দিয়ে সে বারান্দায় গিয়ে বসল, বলল শাড়িটা চেঞ্জ করো ।
শাড়ি চেঞ্জ করার পরে ও বলল আসো দু রাকাত নফল নামাজ পরে আমাদের নতুন জীবন শুরু করি।
অনেকটা সস্তি পেলাম ওর কথা শুনে।

এখন শুধু একটাই সমস্যা, ক্ষুধা!! এমনতেই বিয়ের টেনশনে দুপুরে কিছু খেতে পারিনি। এখন ক্ষুধায় পেট চো চো করছে। ক্ষুধা খুব আজব জিনিষ । মানুষের জন্ম হোক বা মারা যাক ক্ষুধা থেমে থাকে না।
আমার নানা যখন মারা গেল তখন সে বাড়িতে বিরাট কান্নার রোল এদিকে আমার এমন ক্ষুধা লেগেছে। এখন মৃত বাড়িতে তো আর খাবার চাওয়া যায় না। পরে দূর সম্পর্কের এক মামি আমাকে সে দিন খাইয়েছিলেন।

নামাজ শেষে বসতেই দরজায় টোকা শুনলাম । ও দরজা খুললে ওর এক খালা অনেক ধরণের খাবার নিয়ে আসলো। খালা চলে গেলে সে আপন মনেই বলতে লাগল আর বলো না তোমাদের বাড়িতে যে খাবার দিয়েছে সেগুলো আমি কিছুই খেতে পারিনি টেনশনের কারণে। ওর কথা শুনে আমি ফিক করে হেসে ফেললাম। আমার সেদিন রাত ৩টা পর্যন্ত বারান্দায় বসে গল্প করলাম। আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর একটা রাত ছিল সেই রাত । বাইরে ছিল উথাল পাতাল জ্যোৎস্না আর হালকা বাতাস সব মিয়ে একটা চমৎকার পরিবেশ।

ঐদিন জীবনে অনেক কিছু শিখলাম। বাসর রাতের সম্পর্কে আমার যে ভুল ধারণা ছিল সেটা ভেঙ্গে গেল। ওদের সংসার সম্পর্কে, সরি ওদের কেন বলছি, আমাদের সংসার সম্পর্কে অনেক টপ সিক্রেট বিষয় জানলাম। যেমন ওর বাবার সব কথায় বলতে হবে “হ্যাঁ”। শ্বশুর আব্বা যদি সকাল ১০ টার সময় সে বলে এখন বিকাল। আমাকে অবশ্যই তার থেকে বেশি জোড় দিয়ে বলতে হবে হ্যাঁ বাবা এখন বিকাল কি? সন্ধ্যা হব হব করছে। আর আমার শাশুড়ি আম্মার সামনে বোকা সেজে থাকতে হবে যেন কিছুই জানি না। এতে শাশুড়ি আম্মা রাগ করে না বরং খুশিও হয় হালকা স্নেহের ধমক দিয়ে বলবে বউ মা সারাজীবন কি শিক্ষা করলা শুধু কি পড়ালেখাই করছো আর কোন কাজ শিখ নাই? এই বলে সে নিজ হাতে সেটা দেখিয়ে দিবে খুশি মনে।

যেমন একটা ছোট উদাহরণ দেই। ডালে রান্না করার সময় লবণ আমি ঠিক মতই দিতে পারি কিন্তুআমি ইচ্ছা করেই ডালে নিজে লবণ দেই না
আমার শাশুড়িকে ডেকে এনে লবণ দেওয়াই। এতে শাশুড়ি আম্মা খুব রাগের ভান করে বলে এত বয়স হইছে এখন ও ডালে লবণ দিতে পার না আমি না থাকলে কি করবা? আমি কিছু বলি না শুধু হাসি। অবশ্য ডালে নিজ থেকে লবণটা না দেওয়ার বুদ্ধি আমার না এই বুদ্ধি টা ওর মানে আমার
স্বামীর। একদিন জিজ্ঞেস করলাম এই হাস্য কর কাজটা করার দরকার কি?

উত্তরটা ছিল এই রকম ও বলল…. মনে কর তুমি একটা অফিসে অনেক দিন ধরে কাজ করছো হঠাৎ করে তোমার যায়গায় একটা নতুন লোক রাখা হলো যে তোমার সব কাজ করবে। তুমি তখন বেকার হয়ে গেলে এক পর্যায় তুমি তাকে তোমার প্রতিযোগি ভাববে, মনে করবে সে না থাকলে তো তুমি থাকতে তখন সে নানা ভাবে তোমার পিছে লাগবে। আর যদি তোমাকে না সরিয়ে দিয়ে তোমার কাজ কমিয়ে দিয়ে তোমাকে তার বস করে দেয় আর সেই কর্মচারী যদি হয় তোমার আনুগত্য তাহলে তোমার ভালই লাগবে।

ঠিক তেমনি এই কাজ গুলো আম্মা এতদিন দেখা শুনা করতো এখন তুমি করছো আর সব কাজ যদি তুমি করো তখন আম্মা মনে মনে ভাববে সব দায়িত্ব তুমি নিয়ে নিছ তার কোন মূল্য নেই তখন সে নিজেকে বেকার মনে করবে তার মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে। তাই এই সামান্য ডালে লবণ দেওয়াটাকেই সে মনে করে এখন ও সংসারে তাকে দরকার। সে দিনি বুঝে ছিলাম আমার জীবনের সবচেয়ে ভাল বন্ধু হবে ও এবং হয়ে আছে আমার
স্বামী…

সংসার জীবনে প্রবেশ করেছি আজকে অনেক দিন কিন্তু কোন দিন মনে হয়নি এটা আমার বাবার বাড়ি থেকে খারাপ বরং মনে হয়েছে
বাবার বাড়ি থেকে ভালই আছি। এর সবের মূলে রয়েছে আমার স্বামী। একই সাথে সে আমার বন্ধু, স্বামী , পরামর্শ দাতা, গার্জিয়ান সব কিছু।
আল্লাহ যেন এমন স্বামী প্রতিটা মেয়েক দেয় ।

আমার আর জলির বাসর রাতের গল্প

বাসর ঘরে ঢুকে নতুন বউকে দেখে কোন কথা বলার প্রয়োজন মনে করলো না স্বপ্নীল। আস্তে করে নতুন বউয়ের কাছাকাছি গিয়ে কিছুক্ষণ কি যেন ভাবল তারপর তার নাগরা জুতা জোড়া খুলে খাটের নিচে রেখে আস্তে করে সোজা নতুন বউয়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল । নতুন বউ নতুন জামাইয়ের কান্ড দেখে পুরাই ভ্যাবাচ্যাকা খেল । কি করবে তা ভেবে কোন কুল করতে পারল না নতুন জামদানীর ঘোমটা কিছুটা সরিয়ে নতুন জামাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল জামাইয়ের চোখ বন্ধ । কি কারণে তার জামাইবাবু এইভাবে হঠাৎ করে তার কোলে শুয়ে পড়ল তা তার বোধগম্য হল না । নতুন বউ যে এই অবস্থায় একটু ভ্যাবাচ্যাকা খাবে তা ভালো করেই জানত স্বপ্নীল । মৃদু স্বরে বলল, বউ আমার মাথার চুলগুলোতে কি একটু হাত বুলিয়ে দিবা ?

তার জামাই আকাশ থেকে পড়লে যতটা না আশ্চর্য হত তার চেয়েও কয়েকগুন বেশি আশ্চর্য হয়ে সে স্তম্ভিত হয়ে বসে রইল । বিয়ের প্রথম রাতেই নতুন বউয়ের সাথে কোন আলাপচারিতা ছাড়াই এরকম আবদার করে কি কেউ ? কি করবে এখন সে ? মাথায় কি হাত বুলিয়ে দিবে ? না যেভাবে আছে সেভাবে বসে থাকবে ?

বউয়ের এমন আচরন দেখে মনে মনে হাসল স্বপ্নীল ভাবল, বউ বোধহয় ভাবছে আমার মাথায় কিছুটা গোলমাল আছে। না হলে কি আমি এরকম আচরন করি হঠাৎ সে বউয়ের কোল হতে লাফ দিয়ে উঠে বসল। বউয়ের সামনে বসে ঘোমটাটা সরিয়ে হাসিমাখা ৩২ দন্ত বিকশিত করে বলল, তোমার নাম কি ?
এবার নতুন বউয়ের মুখেও কথা ফুটল। সে বলল, বিয়ের আগে কি আপনি আমার নাম শোনেন নাই ?
আমিতো তোমার নামটা জানি ।
জানলে আবার জিজ্ঞেস করলেন ক্যান?
কি দিয়ে কথা শুরু করব তা ভেবে পাইতেছিলাম না। তাই ভাবলাম নাম জিজ্ঞাসা করার মাধ্যমেই শুরু করি ।
ঠিক আছে। এখন আবারো শুনে রাখেন আমার পুরো নাম ফারজানা আক্তার জলি ।
চমৎকার নাম । আচ্ছা শোন একটা কথা বলে রাখি তোমাকে। এই মুহূর্ত থেকে তুমি কিন্তু আমাকে আর আপনি বলে ডাকতে পারবেনা ।
তাহলে কি বলে ডাকব ?
কেন “তুমি” বলে ডাকবে !
আচ্ছা চেষ্টা করব ।
আচ্ছা আমাকে আমার নাম জিজ্ঞেস করতো ?
বলো, তোমার নামটা কি ?
বাবারে এতো দেখি একবারে প্রাইমারী স্কুলের মাষ্টারের মত নাম জিজ্ঞেস করছ !
কেন, তুমিইতো তুমি করে বলতে বললে ।

আচ্ছা ঠিক আছে শোন আমার নাম স্বপ্নীল আহমেদ স্বপ্নীল। কয়েক ঘন্টা পূর্বেও আমি আমি সিঙ্গেল ব্যাচেলর ছিলাম। আজকেই বিয়ে করলাম। বউয়ের নাম ফারজানা আক্তার জলি। বউয়ের সাথে আজকেই আমার প্রথম বাসর রাত….
স্বপ্নীলের বকবকে কিছুটা বিরক্ত হয়ে থামিয়ে দিল জলি ।
থাক আর বলতে হবে না আপনি যে কথা বলার উপরে ডাবল পিএইচডি লাভ করেছেন । সেইটা আপনাকে দেখেই বুঝছি ।
আচ্ছা বলতো ভালবাসার বড় শত্রু কি?
জলিকে থামিয়ে প্রশ্ন করল স্বপ্নীল ।
প্রশ্ন শুনে কিছুক্ষন চুপ করে থাকল জলি। তারপর মাথা দিয়ে ইশারা করে বলল জানিনা ।
আচ্ছা, আরেকটা প্রশ্ন – বলতো ভালোবাসার সবচেয়ে বড় বন্ধু কি?
ভালোবাসার আবার বন্ধু হয় নাকি হাসতে হাসতে বলল জলি।
হ্যা, হয়। ভালোবাসার বন্ধু,শত্রু দুটিই হয় । শোন ভালবাসার সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে গোপনীয়তা আর সবচেয়ে বড় বন্ধু হল স্যাক্রিফাইস। যাই হোক, ম্যাডাম আপনাকে অনেক জ্ঞান প্রদান করিলাম। এবার কি উহার বদলে আমার চুলে একটুখানি হাত বুলিয়ে দেয়া যাবে ?
স্বপ্নীলের কথা শুনে হেসে ফেলল জলি ।
আর কোন উত্তরের আশা না করে জলির কোলে আবার শুয়ে পড়ল স্বপ্নীল কোমল হাতে স্বপ্নীলের সদ্য কামানো ন্যাড়া মাথায় হাত বুলাতে লাগল জলি ।

বউ উধাও !

কখনো ভাবিনি আমার বাসর রাতের গল্প এত ভয়ংকর হবে । সবসময় ভেবেছি আমার বাসর রাতের গল্প হবে মধুময় । কিন্তু বাস্তবে হলো উল্টা ।

বাসর ঘরে ঢুকেই দেখি বউ উধাও ।
সে কি বউ কোথায় গেলো ?
সবেমাত্র বিয়ে করে বউ ঘরে আনলাম, বাড়িতে মানুষের হুড়োহুড়ির মাঝে বউকে ঠিকমতো দেখতে পর্যন্ত পারলাম না ।
ভাবলাম.. বাসরঘরে নিশ্চিন্ত মনে বউকে দেখবো, কিন্তু তার আগেই বউ উধাও !
হায়রে কপাল !

ঊনপঞ্চাশতম বার বিয়ের চেষ্টায় বিফল হয়ে পঞ্চাশতম বারে গিয়ে কোনোরকম আমার বিয়ে হলো ।
সে বউ ও কি না আমায় ছেড়ে চলে গেলো ? ছোট বেলায় কোনো কিছু হারালে গলা ফাটিয়ে “আম্মা” বলে চিৎকার দিতাম ।
আমার ভয়ংকর চিৎকারের শব্দে আম্মা সাথে সাথে হারানো জিনিসটা খুঁজে এনে দিতো । বর্তমান অবস্থায় ও “আম্মা আমার বউ” বলে জোরে চিৎকার দেওয়া উচিত বলে মনে হচ্ছে। চিৎকার দিতে যাবো.. খালি “আম্মা” বলেছি, ওমনি দেখি বউ ওয়াশরুম থেকে বেরুচ্ছে! পুরো চিৎকারটা আর দেওয়া হলো না। সে যাই হোক বউ তো পাওয়া গেল ।
বউ আমার দিকে খানিকটা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
:- আপনি রাতকানা রোগী নাকি ? আমাকে আম্মা বলে ডাকছেন কেন ?
:- ইয়ে..মানে সেরকম কিছু না। আমি ভেবেছিলাম আপনি বোধহয় চলে গেছেন !
:- চলে গেছেন মানে ? ঐ মিয়া আমি কি আমার মা-বাবা ছেড়ে আপনার কাছে আসছি চলে যেতে ? গাধা কোথাকার !
:- জ্বি তা ঠিক !
:- হয়েছে আর ঠিক ঠিক করতে হবে হবে না। দাড়িয়ে না থেকে, সব খুলে খাটে এসে বসুন !

সব খুলে খাটে বসবো মানে ? বউ এসব কি বলছে ? কথাটা শুনে আমার ভীষণ ভয় করছে। কোনোরকম ভয়ে ভয়ে বললাম,
:- স…ব খুলে মানে ?
:- আরে গাধা.. আমি আপনার পাগড়ি আর জুতোর কথা বলেছি। সেই কবে বিয়ে হয়েছে এখনো এসব পড়ে আছেন কেন ? গরম লাগছে না নাকি ?
:- ওহ তাই বলুন খুলছি.. খুলছি !
:- আর হ্যাঁ.. বাসর ঘরেও রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে আছেন কেন ? এখানে এত্তো লজ্জা পাওয়ার কি আছে ? ঘরে তো আপনি আর আমি ছাড়া কেউ নেই ? রুমাল পকেটে রাখুন!
:- ইয়ে..মানে প্রথম বার তো, তাই একটু লজ্জা লাগছে। আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে !
:- ঐ মিয়া..আপনার কি মনে হয় ? আমার কি দ্বিতীয় বার বাসর হচ্ছে ? বকবক না করে চুপচাপ খাটে ওঠে বসুন।
বউ অতি রাগী বুঝতে পারছি। শুনেছি রাগী বউয়েরা নাকি স্বামীদের মারধর পর্যন্ত করতে পারে। এই মূহুর্তে বউয়ের কথা অমান্য করা আমার স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। রুমাল পকেটে রাখলাম, বউয়ের সামনে রুমাল ছাড়া দাঁড়িয়ে থাকতে আমার অতি লজ্জা হচ্ছে। হাত-পা কাঁপছে। অতি লজ্জা পেলে আমার এই সমস্যাটা হয়। এত্তো লজ্জা পাওয়ার অবশ্য যথেষ্ট কারণ ও আছে। ছোটবেলা থেকেই মেয়েদের সামনে দাড়িয়ে আমি কথা বলতে পারি না, লজ্জায় শরির কাঁপুনি দিয়ে উঠে। কলেজে পড়াকালীন সময়ে একবার বন্ধুদের থেকে প্রায় একমণ সাহস ধার করে কলেজের অতি সুন্দরী মেয়ে ফারিহাকে প্রপোজ করেছিলাম। ফলাফল শূন্যের চাইতে ও খারাপ ছিল। সেদিন ফারিহার সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম “ফারিহা আই…আই…আই…। বলতে চাচ্ছিলাম “আই লাভ ইউ” কিন্তু পারছিলাম না। বারে বারে আই এর মধ্যে ঠেকে যাচ্ছিলাম। তার সাথে শরির কাঁপুনি তো ছিলোই। আমার এই টিকটিকির মতো অবস্থা দেখে ফারিহা কষিয়ে গালে থাপ্পর দিয়ে বলল:- আগে “আই লাভ ইউ” পুরোটা ভালো করে মুখস্ত কর। তারপর, প্রপোজ করতে আসিস।
আমার প্রেম করা হলো না কিন্তু গাল লাল হলো। সেদিনি আমার লালগাল ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আর কোনোদিন কাউকে প্রোপোজ করবো না। যাইহোক.. বউয়ের আদেশ রক্ষার্থে কাঁপতে কাঁপতে খাটে গিয়ে বসলাম। কিছু একটা বলা উচিত। কি বলবো বুঝতে পারছি না। তার আগেই বউ বলল:-
:- প্রেম-টেম করেছেন এই অবধি ?
:- (মুচকি হেসে বললাম) নাহ্। আপনি ?
:- বেশি করতে পারি নি। এইতো আট- দশটার মতো হবে।
:- আ..ট  দ….শ?
:- কেন কম হয়ে গ্যালো ?
:- না..না.. তা হবে কেন !
:- গান গাইতে পারেন ?
:- জ্বি মোটামোটি পারি, কিন্তু একটু সমস্যা আছে!
:- ধুর মিয়া সমস্যা-টমস্যা পরে দেখা যাবে, গান শুরু করুন তোহ্!
অনেক ভয় হচ্ছিল! তবুও বুকে খানিকটা সাহস সঞ্চয় করে, চোখ বন্ধ করে, আমি আমার ফাটাবাঁশের বিখ্যাত গলায় সংগীত পরিবেশন শুরু করলাম,
না.না.না… নানানা… নানা
না.না.না… নানানা… নানা
কদম তলায় আমি যাবো না
কদমতলার বংশীওয়ালা গো!
পুরো গান শেষ করার আগেই আমার বউ বলে উঠলো। দোহাই আপনার..দোহাই লাগে.. গান গাওয়া বন্ধ করুন। আর এক লাইন গাইলে আমার সত্যি সত্যি বাসরঘর ছেড়ে পালাতে হবে। এটা কি গান? নাকি ট্রাফিকজ্যাম ?
:- ইয়ে.. মানে..আমি তো আগেই বলতে চেয়েছিলাম গান গাইলে একটু সমস্যা হয়। সমস্যাটা অবশ্য আমার হয় না। যারা গান শুনে তাদের হয়। এর আগে ছোটবেলায় স্যারের অতি রিকুয়েস্টে, ক্লাসে গান গেয়েছিলাম। গানের শুরুতে ক্লাসে উপস্থিতির সংখ্যা ছিলো ৬০ জন, গান শেষ করে দেখি শুধু স্যার আর আমি আছি! বাকি সব উধাও!
:- হয়েছে হয়েছে আপনার কুখ্যাত গলার সুনাম আর বলতে হবে না। এক কাজ করুন, নেচে দেখান। নাচতে পারেন তো?
কথাটা শুনেই বুকের ভেতরতা কেমনজানি নাড়া দিয়ে উঠলো। গান.. তাও জীবনে দু-একবার গেয়েছি কিন্তু সারা জিবনেও একবার ও নাচিনি। নাচ দেখাবো কিভাবে? না করার সাহসটাও হচ্ছে না, যদি রাগের ঠেলায় বউ মারধর শুরু করে? বাসরঘরের দিনি বউয়ের মার খাওয়া কোনো কাজের কথা না। মিন মিন করে বললাম:- নাচতে হবেই?
:- হু নাচতে হবেই, আপনি গান গেয়ে আমার মুড নস্ট করেছেন। এখন নাচ দেখিয়ে মুড ঠিক করবেন। নিন শুরু করুন।

কথাটা বলেই বউ তার মোবাইলের হিন্দি গান ছেড়ে দিল। ফুল ভলিয়মে গান বাজছে।
“ডিজে ওয়ালা বাবু ম্যারা গানা বাজাদে”
কোনো উপয়ান্তর না পেয়ে নাচা শুরু করলাম। খুব সম্ভবত নাচ ঠিকমতো হচ্ছে না। বউ খাটে বসে থেকে হাসছে আর বলছে,
:- হ্যাঁ.. হ্যাঁ হাতটা আরেকটু উপরে। আরে এভাবে না ওভাবে। কোমড় টা আরেকটু দুলবে হ্যাঁ.. হ্যাঁ। আরেহ্! ডানদিকে নাতো বাম দিকে।
বউ নির্দেশমতো নাচার চেষ্টা করছি। কিন্তু পারছি না। হাত ঠিকমতো নাড়াচাড়া করতে পারছি না। কোমড়টাও ঠিক এঙ্গেলে দুলাতে পারছি না। হঠাৎ মনে হলো কে জানি চুল ধরে টানছে। ঘুম ভেঙ্গে গেল! চোখ মেলে দেখি আম্মা খাটের পাশে বেশ রাগী চেহারা নিয়ে দাড়ানো। তারমানে এতোক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম? যাক্ বাবা… তবুও ভালো ঐ রাগী বউ থেকে তো বাঁচা গেল। খুশিতে একটু মুচকি হাসলাম। কিন্তু আমার এই হাসির স্থায়ীত্ব বেশিক্ষণ হলো না। মা রেগে বললেন,
:- হারামজাদা! বিয়ের দিন ও কেউ ১০ টা পর্যন্ত ঘুমোয়? তাড়াতাড়ি বিয়ের জন্য রেডি হ। তোর বন্ধুরা সবাই বাইরের ঘরে অপেক্ষা করছে।
আম্মার কথা শুনে মনে পড়লো:- আজ তো সত্যিই আমার বিয়ে! বেছে বেছে বিয়ের দিনই এমন একটা স্বপ্ন দেখলাম। আমার খানিকটা ভয় ভয় লাগছে। বউ যদি সত্যিই, স্বপ্নে দেখা ঐ বউয়ের মতো হয়? কিন্তু হলেও কিছু করার নেই। সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেছে, বিয়ে থেকে আমার রক্ষা নেই। যাই.. আপতত বিয়েটা করে আসি। সবাই দোয়া করবেন বাসরটা যাতে স্বপ্নের মতো না হয়!

অন্ধকার বাসর রাতের গল্প

রাহাত বাসর ঘরে যাবে এই মুহূর্তে কারেন্ট চলে গেলো। এই কারেন্ট যাওয়ার আর সময় পেলো না। আজকে রাতটা থাকলে কি হত। এমন একটা রাত জীবনে একবারই আসে আর সেটা আজকে রাহাতের আসছে কিন্তু দুঃখের বিষয় কারেন্ট নাই। অন্ধকার বাসর রাত। দরজায় নক করলো কিন্তু খুলছে না দুই তিনবার নক করার পর যখন দরজা খুলছে না। আর ঐদিকে তার বিয়ে করা বউ রাহাতের দরজায় নক করার শব্দ শুনে বিছানা থেকে নামলো। অন্ধকারে বেচারি কোথায় দরজা কোথায় কি বুঝবে কি করে, আবার এই বাড়ি তো তার কাছে নতুন। রাহাতের নতুন বিয়ে করা বউ কি বলে ডাক দিবে এই ভেবে রাহাত আর নক করে দরজায় হালকা ধাক্কা দিলো। দরজা আপনা আপনি খুলে যাওয়াতে রাহাত কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। কেমন জানি একটা ভূতুরে বিষয়। জানালা দিয়ে চাঁদের আলো এই আসে আবার চলে যায় কিন্তু তাতে কি আর মানুষের মুখ দেখা যায়।

রাহাতের বউ ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলো কে….?

রাতুলও ভয়ে ভয়ে নিম্নস্বরে বললো আ আমি। তুমি ঠিক আছো তো?

– আপনি কে..?
– আমি রাহাত। এতক্ষণ বসিয়ে রাখার জন্য আমি সরি,সরি সরি,
(কথা বলার মধ্য দিয়ে রাহাত মোমবাতি খোঁজতে লাগলো। অনেক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর একটা মোমবাটি পেলো।)
– আচ্ছা এত সরি বলার কি আছে স্ত্রীর কাছে স্বামীর সাত খুনই মাফ। আর আপনি কেমন মানুষ এইভাবে চোরের মত কেউ বাসর ঘরে ঢুকে ?

– আসলে প্রথম বিয়ে তো তাই আর কারেন্ট নাই সবমিলিয়ে এই অবস্থা।
– কি বললেন প্রথম বিয়ে !! আরো বিয়ে করবেন?
রাহাত এই কথার সুযোগে চিন্তা করলো তার বউয়ের সাথে একটু মজা করা যাক।

– হুম আরেকটা বিয়ে করলে করতেও পারি। ১ টা না যদি ভালো না লাগে তাহলে বিয়ে করতেই থাকবো।
– আপনি যে এমন আগে জানলে এ বিয়েতে রাজি হইতাম না। ছেলেরা এমন কেন? একটা মেয়ে কত আশা নিয়ে শশুড় বাড়ি আসে কিন্তু সেই আশা আপনার মত ছেলেরা আশাকে ভেঙে চুরমার করে দেন। (কাঁদোকাঁদো স্বরে)

রাহাত মনে মনে চিন্তা করলো আর বেশি ফাইজলামো করা যাবে না। অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে।
– এইযে ম্যাডাম এদিকে তাকান।
– চুপ আপনি আমার সাথে কথা বলবেন না।
– আমি এতক্ষণ যা করছি সব দুষ্টমি করে বলেছি বুঝেছেন ? প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করা যাবে না। আর একটার বেশি বিয়ে প্রশ্নই আসে না।
কোনো উত্তর আসছে না রাহাতের বউয়ের মুখ থেকে। রাহাতের দিকে এমনভাবে তাকিয়ে আছে যেন এক্ষুণি সাপের মত ছোবল মারবে।
– আপনাকে আমার কি করতে মন চাইতেছে জানেন?
– কি আবার জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করতেছে।
– জ্বী না, গলা টিপে ধরতে ইচ্ছে করতেছে। তখন বুঝতে পারবেন মানুষের গলা টিপে ধরলে যেমন লাগে আমার ঠিক তেমনই লাগছিল।
– আমারে মাফ করে দেওয়া যায় না?
– না দেওয়া যায় না।
– ও বুচ্ছি গলা টিপ দিয়ে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করতেছে এইতো। তাহলে আর দেরি না করে এক্ষুণি আসো আর আমারে মেরে ফেলো।
এই কথা বলার পর রাহাতের বউ রাহাতের উপর আরো ক্ষেপে গেছে। রাহাত খিলখিল করে হাসতেছে।

আচ্ছা এসব কথা বাদ দাও তো। চলো এই কারেন্ট আসার ফাঁকে দুইজনে মিলে একটা আড্ডা দেই।

-দুইজনে আবার কি নিয়ে আড্ডা দিবো তাও আবার এই অন্ধকারে।
– আচ্ছা চলো আমরা পালিয়ে যাই।
– পালিয়ে যাই মানে। বোকার মত কি বলছেন এসব?
– আরে এই পালানো আর ঐ পালানোর মধ্যে পার্থক্য আছে।
– কি পার্থক্য?
– ওরা তো প্রেমিক প্রেমিকারা পালিয়ে যায়। আমরা নাহয় স্বামী স্ত্রী পালিয়ে যাবো।
– আপনি আসলেই বোকা। আর এটাই হয়তো আমি চেয়েছিলাম। কারণ বোকা মানুষ কাউকে ঠকাতে পারে না কথাটা জানি কে বলেছিলো।
– মেয়েদের সামনে গেলে ছেলেরা বোকা হয়ে যায় এটাই স্বাভাবিক।
– তার মানে আপনি অনেক মেয়ের সামনে গিয়েছিলেন? আচ্ছা আপনি কয়টা প্রেম করছিলেন?
– মেয়েদের সামনে গিয়েছি অনেকবার যাওয়ার সাথে সাথে কেমন জানি চেঞ্জ হয়ে গেছি কথাবার্তা বলতে পারি না হাত পা কাঁপাকাঁপি করে। আর প্রেম একটাই করছিলাম আজোও সেই মেয়েটির কথা মনে পড়ে। প্রথম প্রেম বলে কথা। আর তুমি কয়টা প্রেম করছিলা? তুমি নিশ্চয় ৪ থেকে ৫ টা তাই না?

– জ্বী না মোটেও না, এইটা আপনাদের ভুল ধারনা। মেয়েরা একটাই প্রেম করে আর যাকে একবার মন দেয় তাকে মরার আগ পর্যন্ত ভুলতে পারে না। আর আপনারা ছেলেরা মনে করেন ৪ থেকে ৫ টা। হ্যা আমি মানি কিছুকিছু মেয়ে আছে এরকম একটার পর একটা প্রেম করেই চলেছে কিন্তু সবাই না।

এইভাবে কথা বলতে বলতে হঠাৎ শুনতে পেলো ফজরের আযান দিতেছে দুজনেই ঠিক করলো ওজু করে নামাজ পড়বে।

বাসর রাতে বিড়াল মারা

-ভাই আপনিতো বিবাহিত, তাইনা?
-হ্যা।
-বাসর রাতে বিড়াল মারার অভিজ্ঞতা তাইলে আপনার আছে?
– তাহলে আমাকে দয়া করে ঐ বাসর রাতের গল্প বলুন । দয়া করে ঘটনাটা একটু শেয়ার করবেন প্লিজ..
আবুলের কথা শুনে তাইজুল বিস্ময়ে ফিরে তাকায়।
আবুল কিন্তু মরিয়া, সে কাতর গলায় মিনতি করে বলে,
“রাগ কইরেন না, উদ্ধার করেন প্লিজ-
বাসর রাতে বিড়াল মারার কথা আমি সেই বাল্যকাল থেকেই শুনে আসছি,
কিন্তু কেন এই বিড়াল মারা- কিছুতেই ভেবে পাচ্ছি না!
জগতে এত এত প্রাণী থাকতে- why should you kill only a cat at wedding night?”
তাইজুল উত্তর দিল না। ভ্রু কুচকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইল আবুলের দিকে।
আবুল অসহিষ্ণু গলায় আকুতি জানায়,
“ও ভাই, কন না কেন? আজ বাদে কাল আমার বিয়া! অথচ বিলাই মারা বিষয়টা এখনও বুঝতে পারছি না-!”
“সত্যিই বিয়া, নাকি ইয়ার্কি করছিস?”
“না না, ইয়ার্কি নয়। সত্যিই বিয়ে! আদাবর থেকে এক বন্ধুর মাধ্যমে বিড়ালও একজোড়া কিনে নিয়ে এসেছি- খাটের নিচে সুতলি দিয়ে বেঁছে রেখেছি- কিন্তু-“
আবুলের কথা শেষ হবার আগেই তাজুল অবাক বিস্ময়ে জানতে চাইল,
“একজোড়া কেন?’
আবুল বলে,
“বিড়াল মারা নিয়ে যাতে বউয়ের সঙ্গে কোন ধরণের কাড়াকাড়ি-মারামারি কিংবা মনোমালিন্য না হয় তাই একজোড়া। একটা মারব আমি, আরেকটা আমার বউ…!”
তাইজুল হাহাকার করে উঠে। বিরক্ত স্বরে বলে,
“জীবনে বহুত গাধা দেখেছি, তোর মতো দেখি নি! তুই কি সত্যি সত্যিই বাসর রাতে বিড়াল মারবি?”
“অবশ্যই! দশটা না, পাঁচটা না, একটা মাত্র বিয়ে করব জীবনে-! সুতরাং শুধু বিড়াল কেন, যদি ডাইনোসরস মারার কথা থাকে তাই-ই মারব!”
“আ-রে-এ-এ আহাম্মক, এই বিড়াল সেই বিড়াল না! এইটা হল বিলাই! বিলাই মানে cat… ক্যাটের প্রতিশব্দ হল pussy. আর pussy মানে…”
চট করে উঠে দাঁড়িয়ে ঝটিকা গতিতে নাক বরাবর হাঁটা শুরু করে আবুল।
সে কিছুতেই ভেবে পাচ্ছে না, মানুষ এত অশ্লীল কেন ? ছি: ছি:!
রাত সাড়ে এগারটা।
আবুলকে বাসর ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে খিল এঁটে দিয়েছে বাড়ির ছেলেমেয়েরা।
হাবাগোবা আবুলের কীর্তি-কলাপে সকলেই ব্যাপক বিনোদিত।
ইতোমধ্যে সে একজোড়া বিড়াল জোগাড় করে খাটের নিচে বেঁধে রেখেছে।
বিড়ালকে জবাই করার জন্যেই বোধহয় কামারশালা থেকে শানিত ছুরি নিয়ে এসে ঘরের বাতায় গেঁথে রেখেছে।
তার উপর, মুর্খসুর্খ আবুল ভাগ্যগুণে অতি রূপবতী এবং শিক্ষিত এক মেয়েকে পেয়ে গেছে একেলা ঘরে… একেবারে নির্জন নিরিবিলি রাতে!
আবুল তার বিড়াল এবং বউকে নিয়ে কী কী উদ্ভট কান্ড করে তা দেখার জন্য বেড়ার ফাঁকফোকর দিয়ে চোখ পেতে রেখেছে গোটা দশেক মানুষ!
আবুল বাসর শয্যার পাশে গিয়ে দাঁড়াতেই রুবিনা খাট থেকে নেমে এসে ওর পা ছুয়ে সালাম করে।
রুবিনার কাধে হাত রেখে আবুল তাকে উঠিয়ে নিয়ে খাটে বসায়। নরম গলায় ডাকে,
– বউ
– জ্বি
– আজ আমাদের সংসার জীবনের প্রথম রজনী। বেঁচে থাকলে দুইজনেই এইরূপ অগুন্তি রজনী পাব। কিন্তু সবার আগে খুব জরুরি একটা বিষয়ে কথা বলতে চাই-
– জ্বি, বলুন
– খাটের নিচে দুইটা বিড়াল বেঁধে রাখছি, আওয়াজ পাইছ?
– জ্বি!
– কেন রাখছি, কও দেখি?
রুবিনা ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকে। উত্তরটা সে জানে না। কিন্তু জানতে আগ্রহী।
বাসর রাতে বিড়াল মারার কথা রুবিনা নিজেও শুনেছে। সে ভেবেছে এইগুলা নেহাতই কথার কথা।
কিন্তু এই মানুষটা সত্যি সত্যিই বিড়াল মারার পায়তারা করছে নাকি? আজব তো!
মানুষটা দেখতে খুব নিরীহ টাইপ। নামটাও খুব গাইয়্যা। নামের মতোই বোকা নাকি উনি?
– রুবিনা
– হু
– আমি আমার ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক দিয়ে অনেক ভেবেচিন্তে দেখলাম, বিড়াল হচ্ছে নোলা টাইপ প্রাণী। নোলা কারে কয় জান?
– জ্বি না।
– নোলা মানে লোভী। অন্যের খাবার দেখে লোভে জিব থেকে লালা ফেলে যে তারেই লোকে নোলা বলে। চোরের মতো এর-ওর খাবারে মুখ দেয়-
রুবিনা বিস্ময়ের ভান করে।
আবুল বলে,
মানুষের মধ্যেও বিড়ালের মতো নোলামি আছে। আমাদের এই হাজী বাড়িতেই রমিজা নামের একটা মেয়ে আছে। সে বিবাহিতা। কিন্তু রোজ রাতে এর-ওর ডাক শুনে পাটক্ষেতে যায়। রমিজার স্বামী আহাদ যখন বাড়িতে থাকে না, বিভিন্নসব পুরুষের সাথে রমিজা শয্যা গরম করে…
রুবিনা হা হয়ে তাকিয়ে থাকে।
অন্যদিকে বাসরঘরের বাইরে যারা চোখ পেতে ছিল, তাদের মধ্যে রমিজা ছিল, তার স্বামীও ছিল…
হুট করেই ওদিক থেকে একটা ধস্তাধস্তির আওয়াজ ভেসে আসে।
রমিজা “ও-বাবা-গো” বলে গুঙিয়ে উঠতে যায়, তার আগেই আহাদ ওর মুখ চেপে ধরে বাশঁবনের ওদিকে সরে যায়। রমিজার আজ খবর আছে!
এইসব আওয়াক অবশ্যি বাসর ঘরে পৌছায় না!
আবুল বলে,”বউ-
– জ্বি
– খুব জরুরি একটা কথা বলি, মন দিয়ে শোন।
– বলুন
– আমাদের সবার ভেতর নোলা বিড়ালের মতো একটা মন্দ বিড়াল বাস করে।
আজ রাতে এই বিড়াল দুইটাকে আমরা মুক্ত করে দেব। বিনিময়ে স্রষ্টার কাছে দোয়া করব… আমাদের বুকের ভেতর যে খবিশ বিড়ালগুলি রয়েছে… তার আগ্রাসন থেকে দয়াময় স্রষ্টা যেন আমাদের মুক্তি দেন…
রুবিনার নিজেও টের পায় নি, আচমকাই ওর চোখ থেকে দুইটা সকরুণ জলধারা নেমে এসেছে। এই মানুষটাকে তার পছন্দ হয়েছে। খুব পছন্দ হয়েছে!
আবুলের কথা অবশ্যি তখনও শেষ হয় নি। ঘরের বাতায় গেঁথে রাখা চকচকে ছুরিকার দিকে তাকিয়ে বলে,
“যদি কোনদিন তোমার মনে হয়, আমার ভেতর থেকে নোলা বিড়াল জেগে উঠেছে…
যদি দেখ, অন্যকোন মেয়ের দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে জিবের জল ফেলছি,
এই ছুরিটা হাতে নিয়ে ঘুমের ভেতরেই আমার বুকে বসিয়ে দেবে। আমি তোমাকে অগ্রিম অনুমতি দিয়ে রাখলাম…
রুবিনা নির্বাক!
আবুল বলে,”আর যদি তোমার মধ্যে কোনদিন এইরকম কিছু দেখি…
রুবিনা বলে,”ওকে ডান!”
আবুল বিস্ময়ে ফিরে তাকায়। জানতে চায়, “ওকে ডান-মানে কি?”
রুবিনা বলে,
“এর মানে হচ্ছে, আমাদের বুকের ভেতর যদি কখনো নোলা বিড়ালের উৎপাত শুরু হয়, আমরা তাকে খুন করে ফেলব… যদি আমার বুকে বিড়াল ঢুকে, খুন করবেন আপনি। আর যদি আপনার ভেতর ঢুকে, খুন করব আমি!”
আবুল হাসিমুখে বলে,”ওকে ডান!”
রুবিনা জলভেজা চোখে আবুলের দিকে তাকিয়ে থাকে। মনে মনে দয়াময় স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করে,”নোলা বিড়ালের উৎপাত থেকে আমাকের হেফাজত করুন প্রভূ!
আমাদের বেঁচে থাকার দিনগুলিকে আরও বেশি মঙ্গলময় করুন… আরও বেশি পূণ্যময়!”

বাসর রাতে বিড়ম্বনা

তুহিনের বাসর রাত আজ…
বেশ নার্ভাস সে, মেয়েদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়, ফ্রি হতে হয় সেটা অনেকটাই অজানা তার।
কি করবে কিভাবে শুরু করবে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছে না সে। বন্ধুরা এত এত বুদ্ধি পরামর্শ দিল, এখন সব এলোমেলো লাগছে ওর।
টেনশন কমাতে বাইরে অনেকক্ষণ পায়চারী করে সে, রাত একটু গভীর হলে একটা উদ্বেগ, চাপা উত্তেজনা আর অস্বস্তি নিয়েই বাসর ঘরে ঢুকে…
আস্তে করে ঘরে ঢুকেই তুহিন দেখে রুমে লাইট জালানো কিন্তু অপি ঘুমিয়ে গেছে।
গত দুই রাত ঘুমায়নি অপি, সারাদিন বাসায় চিৎকার চেচামেচি, আবার আজকে বাবার বাড়ি থেকে আসার সময় সে কি কান্না, তাছাড়া সারাদিনের ধকল…

তুহিনের রুমটা বেশ নিরব হওয়ায় কখন যেন ঘুমিয়ে গেছে…
তুহিন যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল, যাক ও ঘুমাচ্ছে, আপাতত আর কোন টেনশন নাই তাহলে, আমিও তাহলে ঘুমিয়ে পরি আজকের মত..
কিন্তু ঘুমাতে গিয়ে দেখে বালিশ একটা ফাঁকা আছে কিন্তু কোলবালিশ একটাই, আর সেই কোলবালিশটা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে অপি…
তুহিন চিন্তায় পরে যায় কী করবে, এত রাতে বাসার কাউকে ডেকে যদি কোলবালিশ চায়, তাহলে পুরা কেলেঙ্কারি কাণ্ড হবে কিন্তু ও তো কোলবালিশ ছাড়া ঘুমাতে পারেনা….

তুহিন সাবধানে বিছানার উপর উঠে আস্তে আস্তে কোলবালিশটাকে টানতে থাকে যাতে অপি টের না পায়..
কিন্তু কোলবালিশকে অপি এমন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে, তুহিনের কেমন কোলবালিশের প্রতিই হিংসা হতে লাগলো…
সাবধানে সে কোলবালিশ হতে প্রথমে অপির পা টা সরাতে লাগলো, এই ক্ষেত্রে অনেকটা সফল হয়ে যায় .. এইবার হাতের পালা, মনে মনে একটা খুশির ভাব চলে এসেছে… হাতটা সরাতে পারলেই কোলবালিশ তার…

হাত ধরতেই অদ্ভুত একটা পুলক খেলে গেল তার মনে, কোন তরুণীর হাত ধরেনি সে।
আস্তে করে হাতটা যেই প্রায় সরিয়ে ফেলছিল হঠাৎই ধড়ফড় করে উঠে বসে অপি…
ছি, ছি বিয়ের প্রথম রাতেই ঘুমের মধ্যে থাকা একটা মেয়ের শরীর হাতরাচ্ছেন আপনি ! বিয়ে করেছেন বলে কি সব কিনে নিয়েছেন ? বউ বলে কি যা ইচ্ছা তাই, যেভাবে ইচ্ছা, সেভাবে শরীরে হাত দিতে পারেন?
আপনারা পুরুষ মানুষ নারীর শরীর ছাড়া কিছু বুঝেন না? ইত্যাদি বলতে থাকে অপি…

তুহিন তথমত খেয়ে যায়, জীবনে এই রকম পরিস্থিতিতে কখনো পরে নাই সে, মেয়েদের থেকে একশো হাত দূরে দূরে থেকেছে, আর আজ কিনা তার কপালে এই অপবাদ?
শোনো তুমি ভুল বুঝছ, কোনো রকমে বলে উঠে তুহিন..
কী ভুল বুঝব? আপনি আমার ঘুমন্ত শরীরে হাত দেন নাই বলেন?
হা, দিয়েছি, কিন্তু….
কিন্তু কি? মনে করেছেন, বউই ত, শরীরে হাত দিলে কী সমস্যা তাই তো? শুনেন, মেয়েদের শরীরের স্বাদ পেতে হলে আগে তার মন পেতে হয়, মনকে জয় করতে হয়…

সারাজীবন স্বপ্ন দেখে এসেছি আমার স্বামী কত রোমান্টিক হবে, বাসররাতে খুব যত্ন করে আমার ঘুমটা খুলে দিয়ে কথা বলবে, লজ্জা লজ্জা চোখে তাকাবে, কত গল্প কবিতা শোনাবে, বাসররাতটাকে প্রেমালাপে, প্রেমালাপে স্বরণীয় করে রাখবে…… আর তা না, চোরের মত এসে শরীরে হাত দিচ্ছিন আপনি…
বলেই কান্না শুরু করে দেয় অপি….
তুহিন এইবার আরও চুপসে যায়, কোনো মেয়ের কান্না সহ্য করার মত শক্তি তার নাই….
সে আস্তে করে বিছানা থেকে নেমে যায়, উত্তরের বাড়ান্দাটায় গিয়ে বসে সে, এই জায়গাটা তার ভীষণ প্রিয়….
অনেকক্ষণ বসে থাকে সে, কী ভেবেছিল আর কি হল?
নাহ এইভাবে এমন একটা রাতকে কাটিয়ে দেওয়া যায় না, নিজে নিজেই বলে উঠে সে।
আবার ঘরে ঢুকে তুহিন, এইবার দৃঢ় পায়ে, মনের ভিতর মরিয়া হয়ে শক্তি এনে.. ঢুকে দেখে এখনো অপি ফোঁপাচ্ছে….
তুহিন খুব আস্তে করে কোমল স্বরে বলে, আমরা কি এভাবেই কাটিয়ে দেব এই রাত ? তুমি কি চাওনা রাতটা স্বরণীয় হয়ে থাক…
হুম, চাই.. সম্মতি দেয় অপি…

তুহিন অপির হাতটা ধরে, এইবার অপি আর হাত ছাড়ায় না… হাতের টানে টানে চলতে থাকে সে….
তুহিন অপিকে নিয়ে উত্তরের বাড়ান্দাটায় নিয়ে যায়, মুগ্ধ হয়ে যায় অপি…

প্রশস্ত বাড়ান্দায় ছোট্ট দুইটা বেতের চেয়ার পাশাপাশি সাজানো, পুরা বাড়ান্দা জুড়ে নানান জাতের ফুল গাছ, আছে দুইটা উইন্ডচাইম, সামান্য বাতাসেই টুংটাং মিষ্টি একটা শব্দ ভেসে আসছে… আর সামনে খোলা মাঠ, আকাশটা দেখা যায় পরিষ্কার…
শোন অপি, সারা জীবন আমি যত স্বপ্ন দেখেছি তা স্ত্রীকে নিয়ে, বহুবার সুযোগ আসার পরও কোনো মেয়ের হাত একবারের জন্যও ধরিনি আমি, নিজেকে পবিত্র রেখেছি অনাগত স্ত্রীর জন্য, যখনি এইধরণের সুযোগ তৈরি হয়েছে আমার সব সময় মনে হয়েছে আমি আমার স্ত্রীকে ঠকাতে পারব না…. প্রতারণা করতে পারব না কোন মেয়ের সাথে…. বলতেই থাকে তুহিন..

দুইজন চেয়ারে পাশাপাশি বসে আছে, পরিষ্কার আকাশে অজস্র তারা দেখছে এখন, তুহিন তারাগুলোর নাম শেখাচ্ছে, মৃদু বাতাস বইছে ক্ষণেক্ষণে, আর তাতে উইন্ডচাইমে সৃষ্ট হচ্ছে টুংটাং শব্দ। তুহিন ক্ষণেক্ষণে সুনীল, মহাদেব সাহা, পূর্ণেন্দু পত্রী, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতা আবৃত্তি করে চলছে….
অপি শুধু মুগ্ধ আর মুগ্ধই হচ্ছে, কেমন স্বপ্ন স্বপ্ন লাগছে এখন তার।
খানিক আগের ব্যবহারের জন্য লজ্জা লাগছে এখন, কী বাজে বাজে কথা বলেছে সে… আসলে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়ায় সেও অপ্রস্তুত যা মনে এসেছে বলে দিয়েছে…
রাতের দ্বিতীয় প্রহরের শেষভাগে তারা বাড়ান্দা ছেড়ে আবার বিছানায় ফেরে… এইবার আর কেউ কোলবালিশ খুঁজে না…
সকালে দেখা যায় কোলবালিশটা নিচে মেঝেতে অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে
এরপর থেকে তুহিন বা অপি কারোরই আর কোলবালিশের প্রয়োজন পড়েনি….

আপনি এটি পড়তে পারেন- মিষ্টি  প্রেমের গল্প

বউয়ের জ্বালা !

রুমের দরজাটা লাগিয়ে দিলাম । আমার বিয়ে করা বউটা বিছানায় বসে আছে । জানেনেই তো আমার জন্যই অপেক্ষা করছে । তিন মাসে আগে আমদের বিয়ে ঠিক হয়েছে । একটা পিক এ আমার বউটাকে দেখেছিলাম । সেই থেকে আমার ঘুম হারাম হয়েগেছে । কিন্তু আমারতো এখন লজ্জা লজ্জা লাগছে । থাক বাসর রাত লজ্জা পেলে চলবে না বিড়াল মারতে হবে তো । তাই আবল তাবল না ভেবে বিছানায় উঠতে যাব তখনি…

-এই কি করছেনটাকি…?
-কেন বিছানায় উঠছি (হালকা ভয় পেয়ে)।
-কেন বিছানায় উঠছেন কেন?
-কেন তাহলে কি করবো ?
-কি করবেন মানে ?
-না মানে বিছানায় উঠবো না কেন ?
-না উঠতে পারবেন না ।
-তাহলে কি করবো ?
-আমি কি জানি । জান সোফায় গিয়ে বসে থাকেন ।

আমি উৎস । বিদেশ থেকে লেখাপড়া শেষ করে মাত্র তিন দিন হলো দেশে এসেছি । আর এরই মধ্যে আমার জীবনের ১২ টা বাজিয়ে দিল । কি আর করা বিয়েটা করতে হলো । মেয়েটার নাম অনামিকা । কিন্তু আমি ভেবেছি ঢং কইরা অনু ডাকবো । কিন্তু মা ভাবি মিলে কেমন বউ এনে দিল আমাকে । বিছানায়ই উঠতে দিচ্ছে না । আমি আবার তাহসান স্টাইল তো তাই মেযেদের সাথে তেমন ইজি ফিল করতে পারি না । কিন্তু বাসর রাতেই আমার সাথে অত্যাচার করা হচ্ছে । না এটা হবে না ….

– এই শুনো ( এটা বলতেই আমার দিকে গরম চোখে তাকালো, তাই ভয় পেয়ে বললাম)
-না মানে শুনুন ।
-কি ?
-দেখো তুমি না মানে আপনি আমার বিয়ে করা বউ ।
– তাতে কি ?
-না মানে একটু বিছানায় উঠি ? এটাতো আমারও বিছানা । এটাতেতো আমারও ভাগ আছে ।
-ওয়েট ওয়েট । আপনারও ভাগ আছে রাইট । বাট আপনাকে বিছানায় উঠতে হলে কিছু কাজ করতে হবে ।
-কাজ করতে হবে কেন ? আচ্ছা কি কাজ ?
-আপনাকে কিছু শাস্তি আর জরিমানা দিতে হবে ?
-অ্যাঁ …..
-হুমমমম । আপনি যদি এই গুলো সঠিক ভাবে পালন করেন তাহলেই
বিছানায় উঠতে পারবেন ।
.
মেয়েটার কথা শুনে মাথা ঘোরাচ্ছে । কি বলে এই
মেয়ে ।
বাসর রাতের মত একটা রাত । স্বামীকে সালাম করে
আদর করবে কিনা স্বামীর কাছ থেকে জরিমানা নিচ্ছে ।

-এই যে বির বির করে কি বলছেন ??
-না কিছু না । আচ্ছা আমার সাথে তো তোমার
কোনদিন কথাই হয় নি । তাহলে শাস্তি আর জরিমানা কিসের ? আমি কি করেছি ?
-কি করেছেন শুনবেন ?
-হুমম বলো …. সরি বলুন ।
-শুনুন আমি জীবনে কোনদিন প্রেম করিনি । কারন
আমি আমার স্বামীর সাথে প্রেম করবো বলে ।
-কিযে বলেন না । তা আমি কি করতে পারি ?
-ওই এত ঢং করতে হবে না । আপনার জন্য সেই স্বপ্ন আমার পূরন হয় নি । ভেবেছিলাম হবু স্বামীর সাথে বিয়ের তিন মাস আগে থেকে প্রেম করবো ।
তিন মাস আগে বিয়ে ঠিক হইছে ঠিকই আমি প্রেম করতে পারলাম না ।
-সো স্যাড !
-এখন আমি প্রতিশোধ তুলবো ।
-কি করবেন ?
-তিন মাস প্রেম করতে পারি নি সে হিসাব পরে হবে ।
তিন মাসের প্রতি সপ্তাহে ২ দিন ঘুরতাম । সেখানে দুজনের খরচ হতো ৪ হাজার এর মতো তাহলে আমার ২ হাজার । মাসে চার সপ্তাহ । তিন মাসে ১২ সপ্তাহ । তাহলে আমার ২৪ হাজার টাকা হচ্ছে । টাকা টা নিয়ে আসুন ।
-কিহ? এখন তোমাকে এত টাকা দিতে হবে ??
-রুম থেকেই বের করে দিব কিন্তু..
-আচ্ছা দিচ্ছি ।
কি আর করা টাকা টা দিতে হচ্ছে এখন । না জানি এই আমার জীবনে কত টাকা এভাবে মেরে দিবে
-এই নিন টাকা ।
-পুরোটা আছে তো ?
-আপনি গুনে নিন ।
-থাক কম হলে পরে নিয়ে নিব । এখন নেক্সট…..
-আবার কি….
-শুনুন প্রতি সপ্তাহে ২ দিন যে ঘুরতে যেতাম আপনার তো গিফট দেওয়া লাগতো,সেই বাবদ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে আসুন ।
-আমার কাছে তো আর নেই ।
– নেই মানে । জান বাইরে জান ।
-আচ্ছা তুমি এখন না মানে আপনি এখন টাকা নিযে কি করবেন ?
-জরিমানা নিচ্ছি । বেশি কথা না বলে জান টাকা নিয়ে
আসুন । নয়তো দুর হোন
.
হে আল্লাহ আমি কার হাতে পরলাম ।আমার বাসর রাত কি জরিমানা দিতে দিতেই যাবে ….
.
কি আর করা । আবার ১৫ হাজার টাকা এনে দিলাম । …
.
-হুম ঠিক আছে । এখন আমি যে তিন মাস প্রেম
করতে পারি নি তার হিসাব হবে ।
-আবার কত টাকা দিতে হবে । আমার কাছে কিন্তু আর টাকা নেই ।
-এবার টাকা দিতে হবে না । তিন মাস প্রেম করতে না পারার জন্য মাসে তো ৩০ দিন । তিন মাসে ৯০ দিন । ৯০ বার কানধরে উঠবস করতে হবে ।
-ওয়াট । আমি উঠবস করবো ?
-জি হ্যাঁ ।
-অসম্ভব ।
-গেট আউট ।
-এতো রাতে আমি কোথায় যাব ?
-জানি না । তারাতারি রুম থেকে বের হন ।

উপায় না পেয়ে ভাবলাম শাস্তি একটু কমিয়ে নেই ।
তাও আজকের মতো ঘুম টা অন্তত ভালো হোক।

-বলছিলাম কি । আমার তো এখানে কোন দোষ নেই ।
আমি তো দেশে ছিলাম না তাই না । তা না হলে তো
প্রেম করতাম । তাই বলছি কি শাস্তি টা একটু কম করা যায় না ?
-আচ্ছা ৮০ বার ?
-না না একটা কথা বলি ….. ১০ বার করি ।
-কিহ এত কম ??
-দেখো আজ অনেক টায়ারড । এত বার উঠবস করলে আমাকে আর খুজে পাওয়া যাবে না ।তাই বলছি একটু শাস্তি টা কম করুন না ।
-ওকে ১০ বার করুন ফাস্ট ।

ভাবলাম এবার অনেক কম হইছে । ভাগ্যের কি করুন পরিনতি । বাসর রাতে উঠবস করতে হচ্ছে । জানি না কি পাপ করেছিলাম ।

এইভেবে কান ধরতে যাবো তখনি…..
-শুনুন বেলকুনিতে গিয়ে দেখে আসুন তো চাদ উঠেছে কিনা ।

শাস্তির ভয়ে তারাতারি দেখতে গেলাম । দেখি অনেক বড় চাদ উঠছে । বাইরে চাদের আলোতে ঝিকমিক করছে । আজকের চাদ টা আমার ঘরের চাদের মত এত সুন্দর নয় । যাই হোক রুমে এসে বললাম আপনার মত একটা চাদ উঠেছে এত বড় ।
খুশি হয়ে বললো ….
-ওকে চলো
-কোথায় ?
-বেলকুনিতে

যাক শাস্তি টা মাফ হয়ে গেল । আমিও খুশি মনে বেলকুনিতে গেলাম ।

তার ১০ হাত দুরে দাড়িয়ে আছি ।
বেলকুনির সোফায় বসে ……
-এখানে বসুন ।
.
তার থেকে দুরে সরে বসলাম ।
-একি এত দুর কেন ?
-না আপনি যদি কিছু মনে করেন ?
-কিছু মনে করবো মানে । আমি তোমার বোউ না বুদ্ধু ।
-হুমম ।
-কাছে আসো ।

কাছে গেয়ে বসলাম । অনামিকা আমার হাত ধরে বসে রইলো ।
আমি কোন কথা বলছিনা ।
অনামিকা বললো কিছু বলছো না কেন ?
আমি বললাম কি বলবো ।
অনামিকা মনটা খারাপ করে আমার হাত জরিয়ে কাধে মাথা রেখে বসে রইলো ।
কিছুক্ষন পর…..
-উৎস…
-হুমম বলো…
-আই লাভ ইউ….
-কবে থেকে
-তিন মাস আগে থেকে ??
-আই লাভ ইউ টু।

হঠাৎ আমার ঠোটে মিষ্টি একটা নরম ঠোটের স্পর্শ ….
নিজেকে মনে হয় হারিয়ে ফেলেছি ।
প্রকৃতির সব কিছু যেন থমকে গেছে ।
কিন্তু আমার মনের ভেতর ঢেউ খেলছে….
মধুর সময়টা পার করার পর…অনামিকার দিকে তাকালাম…
লজ্জায় আমাকে জরিয়ে ধরে আমার বুকে মুখ লুকালো ।
চাদের জোছোনায় ওর মুখের একপাশ টা ঝলমল করছিল …
কিছু চুল ওর চওল টা ঢেকে দিতে চাচ্ছে …
আমি চুলে হাত দিতেই ও আরো শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরলো ।আমিও ওকে পরম যত্নে আগলে রেখেছি……
.
-আমাকে এভাবেই সব সময় আগলে রাখবে তো ?
-হুম …
-কখনো কষ্ট দিবা না তো ?
-তোমায় কখনোই কষ্ট দিব না । খুব ভালোবাসবো ।
-মাঝে মাঝে জরিমানা চাইলে দিবা তো ?
.
তখন ওর মুখটা তুলে কপালে একটা আলতো চুমু একে দিয়ে বল্লাম …
-আচ্ছা দিব ।
-আর কখনো দুরে চলে যাবে না তো ?

আমি তো দুরে চলে যাই নি তাহলে তুমি কেন
দুরে চলে গেলে ?
আমি তোমাকে কখনোই একটুও কষ্ট দিই নি ।
তবুও কেন আমাকে একা করে দিয়ে গেলে ।

তোমাকে আমার অন্তরের গভীরে বেধে রেখেছিলাম .
সেই খান টা তুমি খালি করে দিয়ে কেমন করে আছো.

চোখের পানি টপ টপ করে গড়িয়ে পরছে… আর বাসর রাতের সেই মধুর মুহুর্ত গুলো ভাবছিলাম ।

একই জাযগায় বসে আছি ।সেই চাদটা আজকেও উঠেছে ।
প্রকৃতি টাও একই রকম আছে কিন্তু আমার বুকটা হয়ে আছে শূন্য….

আমাকে বলেছিল আমাকে নাকি ছোট্ট একটা বাবু উপহার দিবে…
স্বারর্থপরের মত উপহার টা না দিয়েই চলে গেলে ….
কেমন করে থাকবো আমি এখন….

কিছু কিছু ভালোবাসা অনেক মধুর হয় ।
কিন্তু তার স্থায়ীত্ব টা এরকম বেশি দিন থাকে না ।

বন্ধু হও যদি….
তবে সঙ্গী হবো আমি ।
হাতে হাত রেখে এসো……
আমার গল্পে তুমি ।

আপনি চাইলে প্রেমের কবিতাও পড়তে পারেন- রোমান্টিক প্রেমের কবিতা

বিনামূল্যে বাংলা গল্পের বই ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন- বাংলা গল্পের পিডিএফ বই একদম ফ্রি ডাউনলোড!

আশা করি এখানে তুলে ধরা বাসর রাতের গল্প গুলো আপনাদের ভালো লেগেছে । চাইলে আপনিও আপনার বাসর রাতের গল্প আমাদের লিখে পাঠাতে পারেন meetus@fancim.com এই ঠিকানায় । আমাদের গল্পগুলো আপনাদের ভালো লাগলে শেয়ার করে উৎসাহ দেয়ার অনুরোধ রইলো । ধন্যবাদ ।

এই সপ্তাহের সর্বাধিক দেখা ভিডিও:

বাংলাদেশীদের জন্য সেরা অ্যাপ

BD MEDIA MATE APP SCREENSHOT

আমাদের ওয়েবসাইটের জনপ্রিয় পোস্টগুলি:

BEST APP FOR US PEOPLE

US MEDIA MATE APP
Don`t copy text!