সাভারে প্রতারনার মাধ্যমে বিপুল অর্থ আয়ের জন্য অভিনব কৌশল প্রয়োগ করেছেন শাহিনুর রহমান নামে এক নারী ।
বহু ব্যাক্তির সাথে প্রেম ও বিয়ের মাধ্যমে দেমমোহর, নগদ টাকা, গয়না সহ বিভিন্ন সম্পদ আয় করেছেন তিনি । দেনমোহরের টাকা আদায়ের জন্য এ পর্যন্ত বিয়ে করেছেন অন্তত ১২টি এছাড়া প্রেম করেছেন আরো বহু জনের সাথে ।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তরা পশ্চিম থানায় ভুক্তভোগি এক স্বামী মামলা দায়ের করার পর তাকে গ্রেফতার করা হয় । তদন্ত করতে গিয়ে বেড়িয়ে আসে শাহিনুরের প্রতারনার চাঞ্চল্যকর তথ্য ।
তদন্তে জানা যায় নিজেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও একজন বিসিএস ক্যাডার (নির্বাহি মেজিস্ট্রেট) হিসেবে পরিচয় দিয়ে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন । তাদের কাছ থেকে যতটা সম্ভব টাকা, গয়না সহ মূল্যবান সামগ্রী আদায় করতেন ।
এরপর প্রেমিকদের মধ্যে থেকে যারা কিছুটা বেশি বিত্তবান তাদের সাথে মোটা অংকের দেনমোহর ও গহনার বিনিময়ে বিয়ে করে কয়েকমাস সংসার করার পর বিভিন্ন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিচ্ছেদ নিয়ে নিতেন অথবা আত্বগোপনে চলে যেতেন ।
মাঝখান থেকে অল্প কয়েক মাসেই তিনি পেয়ে যেতেন প্রচুর টাকা, গয়না ও মোটা অংকের দেনমোহর । এভাবে একে একে তিনি অন্তত ১২টি বিয়ে করেছেন বলে এপর্যন্ত জানা গেছে ।
নিজেকে বিসিএস ক্যাডার, নির্বাহি মেজিস্ট্রেট ও মন্ত্রীর ভাগনি হিসেবে পরিচয় দিলেও বাস্তবে তার বাবা বিপিএটিসির একজন গাড়িচালক ছিলেন । বাবার অকাল মৃত্যুর পর তার মা বিপিএটিসিতে আয়ার কাজ করে সংসার চালাতেন ।
শাহিনুর বিপিএটিসির কর্মচারী কোয়ার্টারে বড় হয়েছেন। সেখানে বিসিএস ক্যাডারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। ফলে প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরির পদ, পদমর্যাদাসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ছোটবেলা থেকেই তার ধারনা রয়েছে ।
এছাড়া মাত্র পঞ্চম শ্রেণী পাস হলেও তিনি ইংরেজিতে মোটামুটি কথা বলতে পারতেন । ফলে সব বিষয় মিলিয়ে তিনি মানুষকে সহজেই ফাদে ফেলতে সক্ষম হতেন ।
সর্বপ্রথম তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২তম ব্যাচের সাবেক এক শিক্ষার্থীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রথমে বিয়ে করেন । পরে স্বামীর আত্মীয়-স্বজনদের চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েকজনের কাছ থরকর নগদ সাত লাখ টাকা ও ১০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার, এবং আরো মূল্যবান সামগ্রি হাতিয়ে নেন। আরেক স্বজনকে ক্যাডেট কলেজে ভর্তির নাম করে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের অর্থ।
এরপর আরো বিভিন্ন ব্যক্তিকে প্রেম ও বিয়ের ফাদে ফেলে নগদ টাকা, স্বর্ন ও দেনমোহর হিসেবে ১০ লাখ/১৫লাখ এমনকি ৩০লাখ টাকাও আদায় করতেন !
তার এই প্রতারনার কাজে তার পরিবারের সদস্যরাও সহায়তা করতেন বলে জানা গেছে । ইতিমধ্যে তার দুলাভাইকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে ।
পুলিশের উত্তরা বিভাগের ডিসি নাবিদ কামাল জানান ‘একটি প্রতারণার মামলায় ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে তিনি একজন প্রতারক। মামলার তদন্ত এখনও চলছে।
Add Comment