পান্তাভাতকে গরিব-মিসকিনদের খাবার ভেবে অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই বরং এর বিভিন্ন উপকারি দিকগুলোর কথা ভেবে আমাদের খাবার তালিকায় নিয়মিত পান্তাভাতকে স্থান করে দেয়াটাই হতে পারে প্রকৃত বুদ্ধিমানের কাজ! নিচে উল্লেখিত পান্তাভাতের উপকারি দিকগুলোর কথা আগে জেনে নিন তারপর নিজেই বিবেচনা করে দেখবেন পান্তাভাতকে অবহেলা করার কোন সুযোগ আছে কিনা।
* পান্তাভাতে রয়েছে ভিটামিন বি ৬ : ভিটামিন বি 6 মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। একটি গবেষণা প্রকাশিত আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশন দেখা গেছে যে ভিটামিন বি -6 এর উচ্চ ঘনত্বযুক্ত ব্যক্তিরা দুটি পদক্ষেপের মেমরি ফাংশন সম্পর্কে আরও ভাল পরীক্ষা করেছেন।
* এতে রয়েছে উপকারি ব্যাকটেরিয়া যা খাবার হজমে সহায়তা করে থাকে। সঠিকভাবে খাবার হজম হলে তা যেমন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে তেমনি খাবারের পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরে পৌছায়। ফলে শরীর হয় সতেজ ও শক্তিশালী।
* পান্তাভাত শরীরের কোষ সতেজ রাখে ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। এর মাধ্যমে এটি অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়তা করে।
* এটি শরীরে পানির ঘাটতি পূরন করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে।
* গ্রীষ্মকালে পান্তাভাত খেলে তা আপনাকে বাড়তি উপকারিতা প্রদান করবে। পান্তাভাত পেট ঠান্ডা রাখবে ও শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করে আপনাকে সতেজ রাখবে।
* পান্তাভাত খেলে শরীরের কোষ সতেজ থাকে এবং ত্বকের শুষ্কতা, রুক্ষতা দুর হয়।
* সাধারন ভাতের চালগুলোতে জিংক, লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম সহ বিভিন্ন খনিজ উপাদান ফাইটিক এসিডের সাথে যুক্ত অবস্থায় থাকে ফলে এসকল খনিজ উপাদানগুলো পরিপূর্নভাবে দেহে শোষন হতে পারেনা কিন্তু সারা রাত ভাতকে ভিজিয়ে রাখলে পানির সাথে ভাতের বিক্রিয়ার ফলে খনিজ উপাদানগুলোর পরিমান বৃদ্ধি পায় এবং দেহে বেশি পরিমানে শোষন হয় যা শরীরের জন্য ভালো।
* সাধারন চালের ভাতে ক্যালসিয়ামের পরিমান থাকে গড়ে ২১ মিলিগ্রামের মত তবে ৮ থেকে ১০ ঘন্টা ভাত পানিতে ভিজিয়ে রাখলে তাতে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ক্যালসিয়ামের পরিমান বেড়ে দাড়ায় ৮০০ মিলিগ্রামের মতো! ফলে বাড়তি ক্যালসিয়াম সরবরাহের মাধ্যমে হাড় ক্ষয় রোধ করতে ও হাড়ের শক্তি বাড়াতে পান্তাভাত বিরাট ভূমিকা পালন করে।
* এই ভাতে পটাসিয়ামের পরিমানও অনেকটাই বৃদ্ধি পায় যা হৃদরোগে আক্রান্ত মানুষদের জন্য উপকারি।
* এই ধরনের ভাত কোলাজেন তৈরি করে থাকে। আর কোলাজেন ত্বকে দ্রুত বয়সের ছাপ পড়া প্রতিরোধ করে থাকে।
আপনি এটিও পড়তে পারেন- সহজলভ্য কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার তালিকা
* এলার্জি এবং আলসারের সমস্যা দুর করতেও পান্তাভাত ভূমিকা রাখে।
* হাড় ও পেশির শক্তি বৃদ্ধিতে এটি সহায়তা করে থাকে।
* রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতেও এটি বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। পান্তাভাত খাওয়ার উপকারিতা অনেক। উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও এতে আরো নানাবিধ উপকারিতা রয়েছে। তাই অবহেলা না করে এখন থেকে নিয়মিত পান্তাভাত খেতে পারেন। আমরা সবসময় চেষ্টা করি সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে আমাদের পাঠকদের জ্ঞানভান্ডার আরো সমৃদ্ধ তুলতে এবং যা কিছু ভালো তা গ্রহন করতে ও যা কিছু খারাপ তা বর্জন করতে। লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন, ভালো লেখাগুলো শেয়ার করলে আমরা উৎসাহ পাই।
আপনি এটিও পড়তে পারেন- সরিষার তেলের উপকারিতা ও কিছু অসাধারণ গুণ
Add Comment