হাশরের ময়দানে পাপ পূন্য হিসাবের সময় শুধু ফরজ ইবাদতের উপর নির্ভর করে জান্নাতে যাওয়া কঠিন হবে। ফরজ ইবাদতের পরও পূন্যের পাল্লায় ঘাটতি দেখা দিলে তখন নফল ইবাদত দিয়ে সেই ঘাটতি পুরন করা হবে।
নফল ইবাদতের ফজিলত বর্ননা করে শেষ করা যাবেনা। বিভিন্ন ধরনের নফল ইবাদতের মধ্যে নফল নামাজ অন্যতম। নফল নামাজ পড়ার ফজিলত বা উপকারিতা অনেক। সবচেয়ে বড় কথা হলো বেশি বেশি নফল নামাজ পড়লে ও অন্যান্য নফল ইবাদত করলে এর মাধ্যমে আল্লাহর অধিকতর নৈকট্য লাভ করা যায়।
নফল ইবাদত মানেই হলো ঐচ্ছিক ইবাদত। যে ইবাদত করার কোন বাধ্যবাধকতা নেই অর্থ্যাৎ না করলে গুনাহ নেই কিন্তু করলে সওয়াব আছে এমন ইবাদতই হলো নফল ইবাদত।
সুতরাং নফল নামাজ না পড়লেও কোন গুনাহ নেই জানার পরও যারা আল্লাহকে খুশি করার জন্য নফল নামাজ পড়েন তাদেরকে আল্লাহ অধিক উত্তম প্রতিদান দান করবেন।
নফল নামাজ পড়ার ফজিলত প্রসংগে কুরআন ও হাদিসের উদৃত্বি:
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন যে, নবীজি সা. বলেছেন, ফরজের পর যে সবসময় নফল নামাজ আদায় করে সে আমার বেশি নৈকট্য অর্জন করতে পারবে। অতপর: আমি তাকেই ভালোবাসতে থাকি।
অতপর আমি তার কান হয়ে যাই যার দ্বারা সে শুনতে পায়। আমি তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখতে পায়। (বোখারি শরীফ)
নফল নামাজের উপকারিতা সম্পর্কে উম্মে হাবিবা রা: হতে আরো একটি হাদিস বর্নিত রয়েছে। উম্মে হাবিবা রা: বলেন, আমি রাসুল সা: কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, যে ব্যাক্তি দিনে রাতে ১২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করবেন এর বিনিময়ে জান্নাতে তার জন্য একটি ঘর নির্মিত হবে। (মুসলিম শরীফ)
নফল সালাতগুলোর মধ্যে তাহাজ্জুদের সালাতের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। এটি বান্দার জন্য আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের একটি সেরা উপায়।
তাহাজ্জুদের ফজিলত প্রসংগে পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ নিজেই উল্লেখ করেছেন, “রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ নামাজ কায়েম করুন। এটা আপনার জন্য এক অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায় যে আপনার প্রতিপালক আপনাকে প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন। (সূরা বানী ইসরাইল, আয়াত : ৭৯)
সুনানে আহমদ বলেন, ‘আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেছে।, আমি রাসূলুল্লাহ (দ.)কে বলতে শুনেছি। ‘আফজালুস সালাতি বাদাল মাফরুদাতি সালাতুল লাইলি’। অর্থাৎ ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ।’
নফল নামাজগুলোর মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ন নামাজ হলো চাশতের নামাজ।
হযরয় বুরাইদা (রা) হতে বর্নিত, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষের দেহে ৩৬০টি জোড় রয়েছে। মানুষের উচিত প্রত্যেকটি জোড়ের জন্য একটি করে সদকা করা। ’
এসময় সাহাবীরা প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসুল! কার শক্তি আছে এই কাজ করার? জবাবে নবীজি (সা.) বলেন, মসজিদে কোথাও কারো থুতু পড়ে থাকতে দেখলে তা ঢেকে দাও অথবা রাস্তায় কোনো ক্ষতিকারক কিছু দেখলে সরিয়ে দাও। তবে এমন কিছু না পেলে, চাশতের দুই রাকাত সালাতই এর জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ, হাদিস নং ৫২২২)
কিভাবে নফল নামাজ পড়তে হয় তা জানতে এখানে ক্লিক করুন
নফল নামাজের ফজিলত সম্পর্কে কুরআন শরীফ ও হাদিসে এমন আরো অনেক তথ্য পাওয়া যায়। সুতরাং আমাদের সকলেরই উচিত যত বেশি সম্ভব নফল নামাজ ও অন্যান্য নফল ইবাদত করা।
Add Comment