Home » মহানবীর বহু বিবাহ এবং আমার মতামত
নিবন্ধ

মহানবীর বহু বিবাহ এবং আমার মতামত

মহানবীর বহু বিবাহ এবং আমার মতামত –

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) বিভিন্ন সময়ে মোট ১১ জনকে বিয়ে করেছিলেন । অনেকেই মহানবী (সা:) এর এই একাধিক বিয়ে করারে নিয়ে বিভিন্ন খারাপ মন্তব্য করে থাকেন এবং আরো কিছু মানুষ আছেন যারা আরো বিভিন্ন কুরুচিকর মন্তব্য করে থাকেন । যারা ইসলামকে একটু বেশি অপছন্দ করেন তারা আরো একধাপ এগিয়ে গিয়ে কখনো কখনো নবিজিকে নারী লোভীও বলে ফেলেন । যদিও ইসলাম বা নবিজির উপর তাদের কেন এত ক্ষোভ তা তারা নিজেরা সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারবেননা বলে আমি নিশ্চিত ।

যাই হোক, কে কি বলে বেড়ায় সেটা নিয়ে আমি আর কথা বাড়াতে চাইনা । আমি শুধু বলতে চাই যে মহানবীর বিয়েগুলো ছিলো সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে । নারীদের প্রতি লোভ থেকে নয় ।

একটু চিন্তা করলে আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারবেন । ছোটবেলা থেকেই মহানবি (সা:) ছিলেন এলাকার সকলের প্রিয় পাত্র । সবাই তাকে ভালোবাসতো এবং পছন্দ করতো । যে কেউ তার কাছে খুশি মনেই নিজের মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি হতো । ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করার পরে মাঝখানে কয়েক বছর তার সাথে মক্কাবাসীর বিরোধ তৈরি হয়েছিলো কিন্তু পরবর্তীতে মক্কা মদিনা তার হাতের মুঠোয় চলে আসে । শুধু মক্কা মদিনা নয় বরং আশেপাশের অনান্য দেশ সহ বিস্তৃর্ন অন্চল ছিলো তার অধীনে । সেসময় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান লোক ছিলেন তিনি । তিনি চাইলেই যে কোনো সুন্দরী যুবতিকে বিয়ে করতে পারতেন বা যত খুশি ততজনকেই বিয়ে করতে পারতেন । তাকে বাধা দেয়ার মতো কেউই তখন ছিলোনা । বরং তাকে বিয়ে করতে পারলে যে কোন মেয়েই খুশিই হতো এবং মেয়ের বাবা মা ও তাদের মেয়েকে এমন একজনের কাছে নির্দ্বিধায় বিয়ে দিতো এটা নিশ্চিত করেই বলা যায় ।

তিনি চাইলেই যে কোন ধনী, সুন্দরি, যুবতী মেয়েকে বিয়ে করতে পারতেন এবং এটাও বলতে পারি যে যতজনকে ইচ্ছা ততজনকেই বিয়ে করতে পারতেন । কারন তখনকার সমাজে একাধিক বিয়ে করাটাই ছিলো স্বাভাবিক । এছাড়া অনেকেই একটু টাকা পয়সা থাকলেই নিজের পছন্দমতো দাসীও কিনে নিতো । তাহলে এত সুযোগ থাকতে কেন তিনি বেছে বেছে অসহায়, বিধবা এবং বয়স্ক মহিলাদের বিয়ে করেছিলেন ? এ থেকেই বোঝা যায় এখানে নারীদের প্রতি তার কোন লোভ ছিলোনা । যদি লোভ থাকতো তাহলে তিনি অনায়েসেই ৫০-৬০ বা তারও বেশি সুন্দরি যুবতিদের বিয়ে করতে পারতেন এবং নিজের ইচ্ছামতো শত শত সুন্দরি দাসী রাখতে পারতেন । তখনকার সমাজে এগুলো কোন বিষয়ই ছিলোনা । কিন্তু তিনি তা করেননি । এমনকি মক্কার নেতারা ইসলাম প্রচার বন্ধ করার বিনিময়ে তাকে অনেক ধন-সম্পদ এবং সুন্দরি দাসি উপহার দেয়ার কথা বললেও তা তিনি এড়িয়ে গেছেন ।

নবিজি একমাত্র আয়েশা (রা:) কেই অল্প বয়সের সময় বিয়ে করেছিলেন । যদিও এখনকার বাস্তবতায় এটা অল্প বয়স কিন্তু তখনকার বাস্তবতায় এটাই ছিলো স্বাভাবিক বয়স । তখনকার সময়ে অধিকাংশ মেয়েদেরই ৬-৭ বছর বয়সে বিয়ে হতো । এমনকি অনেকের ৪-৫ বছর বয়সেও বিয়ে হয়ে যেতো । সে হিসেবে নবিজি তাকে সঠিক বয়সেই বিয়ে করেছেন এবং বিয়ের তিন বছর পর আয়েশা (রা:)কে তার সংসারে এনেছেন ।

যেখানে সবকিছু জেনে বুঝেই আয়েশা (রা:) কে তার পরিবার ঐ বয়সে বিয়ে দিয়েছে সেখানে নবিজি তাকে সংসারে আনার আগে তিন বছর সময় দিয়েছেন । নবিজির মাঝে কোন তাড়াহুড়া ছিলোনা এবং লোভ লালসাও ছিলোনা বরং ধৈর্য ছিলো বলেই সবার সম্মতিতে সব কিছু জেনে বুঝে বিয়ের পরও নিজের বিবাহিত স্ত্রীকে ৩ বছর সময় দিয়েছেন ।

এছাড়া তিনি দিন-রাত সাহাবিদের সাথে আলোচনা, ধর্ম প্রচার, ব্যবসা-বানিজ্য এবং ইবাদাত বন্দেগি নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন । ফলে স্ত্রীদের নিয়ে সারাদিন বসে থাকার মতো সময়ও তার ছিলোনা । সুতরাং সহজেই বোঝা যায় যে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর মাঝে নারীদের নিয়ে কোন লোভ লালসা ছিলোনা এবং সামাজিক ও মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই তিনি একাধিক বিয়ে করেছিলেন ।

কেউ কেউ এটাও বলে থাকেন যে, উপকার করতে চাইলে টাকা পয়সা দিয়েওতো উপকার করা যায় । বিয়ে করার কি দরকার ছিলো ? জ্বী । নবিজি বিয়ে না করেও বহু মহিলাকে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করেছেন । তবে যে কোন কারনেই হোক, নবিজি হয়তো তাদেরকে জিবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিতে চেয়েছেন বা হয়তো তাদের কোন আচরন নবিজির বিশেষভাবে ভালো লেগেছে বলেই তিনি তাদেরকে বাইরে থেকে শুধু সাহায্য না করে নিজের জিবনের সাথেই জড়িয়ে নিয়েছেন ।

আর বয়স্ক বা বিধবা মহিলা বলে মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে বিয়ে করেছেন বলে যে বিয়ে করে ফেলে রেখেছেন তেমনও কিন্তু নয় । অবসর সময়ে তিনি তার স্ত্রীদের সময় দিতেন, তাদের সাথে গল্প-গুজব করতেন, রসিকতা করতেন এবং মন থেকে তাদের ভালোও বাসতেন । তার ব্যস্ত জিবনে যখনই সময় পেতেন তখনই তখনই তাদেরকে সময় দিতেন । তাদের প্রত্যেকের ব্যপারেই তিনি ছিলেন অসম্ভব যত্নশীল ।

সুতরাং মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর জিবনী দেখলেই উপলব্ধি করা যায় যে সেখানে লোভ-লালসা বা অশ্লীলতার কোন সুযোগই নেই । আমি আমার মতামত এখানে তুলে ধরেছি । আপনাদের কতটুকু বুঝাতে পেরেছি জানিনা । আপনাদের কোন মতামত থাকলে তা তুলে ধরতে পারেন । ধন্যবাদ ।

এই সপ্তাহের সর্বাধিক দেখা ভিডিও:

বাংলাদেশীদের জন্য সেরা অ্যাপ

BD MEDIA MATE APP SCREENSHOT

আমাদের ওয়েবসাইটের জনপ্রিয় পোস্টগুলি:

BEST APP FOR US PEOPLE

US MEDIA MATE APP
Don`t copy text!